Connect with us

গান বাজনা

বরেণ্য সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন মারা গেছেন

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

ফরিদা পারভীন (জন্ম: ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৫৪; মৃত্যু: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫)

বরেণ্য লোকসংগীত শিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই। গতকাল (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।  তাঁর বয়স হয়েছিলো ৭১ বছর। তিনি স্বামী ও চার সন্তান রেখে গেছেন।

ফরিদা পারভীন দীর্ঘদিন ধরে কিডনিসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। এ কারণে সপ্তাহে দুই দিন ডায়ালাইসিস করাতে হতো তাঁকে। গত ২ সেপ্টেম্বর ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়মিত ডায়ালাইসিসের জন্য নেওয়া হলে নাজুক অবস্থা দেখে গুণী এই শিল্পীকে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসক। সেদিন থেকে তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

ফরিদা পারভীন ফুসফুস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি ও থাইরয়েড জটিলতায় আক্রান্ত ছিলেন। বমি ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাঁর শারীরিক অবস্থা আরো জটিল আকার ধারণ করে। গত ১০ সেপ্টেম্বর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাঁর সুস্থতার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের চিকিৎসা দিয়ে চেষ্টা চালায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি চলে গেলেন চিরতরে।

ফরিদা পারভীন (জন্ম: ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৫৪; মৃত্যু: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫)

১৯৫৪ সালে ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্মগ্রহণ করেন ফরিদা পারভীন। ১৯৬৮ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে তাঁর পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়। লালনের গানের শিল্পী হিসেবে আলাদা পরিচিতি পান তিনি। লালনের গানের বাণী ও সুরকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান সর্বজনস্বীকৃত। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বদরবারে তিনি লালন সাঁইয়ের বাণী ও সুর প্রচারের কাজে নিবেদিত ছিলেন। জাপান, সুইডেন, ডেনমার্ক, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশে লালনসংগীত পরিবেশন করেছেন তিনি। ২০০৮ সালে  জাপান সরকার তাঁকে কুফুওয়া এশিয়ান কালচারাল পদক দিয়েছে।

জীবনের বেশিরভাগ সময় লালন সাঁইয়ের গান গেয়ে কাটিয়েছেন ফরিদা পারভীন। লালনসংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭৮ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি। তার গাওয়া বেশ কিছু আধুনিক ও দেশাত্মবোধক গান শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘তোমরা ভুলে গেছ মল্লিকাদির নাম’, ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ ইত্যাদি।

ফরিদা পারভীন (জন্ম: ৩১ ডিসেম্বর, ১৯৫৪; মৃত্যু: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫)

১৯৯৩ সালে ‘অন্ধ প্রেম’ সিনেমার ‘নিন্দার কাঁটা’ গানের সুবাদে শ্রেষ্ঠ সংগীতশিল্পী (নারী) হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন ফরিদা পারভীন।  তিনি নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন অচিন পাখি নামের সংগীতের একটি স্কুল।

ফরিদা পারভীনের প্রথম স্বামী ছিলেন প্রখ্যাত গীতিকার ও কণ্ঠশিল্পী আবু জাফর। তাঁর সেই সংসারে তিন ছেলে ও এক মেয়ে আছে। তারা হলেন জিহান ফারিয়া, ইমাম নিমেরি উপল, ইমাম নাহিল সুমন ও ইমাম নোমানি রাব্বি।

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ