এবার আসছে জয়ার ‘ডিয়ার মা’

‘ডিয়ার মা’ সিনেমার পোস্টার (ছবি: ফ্লায়িং কালারস পিকচার্স)

ঈদুল আজহায় ‘তাণ্ডব’ ও ‘উৎসব’ নিয়ে দারুণ সাড়া পেয়েছেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। এবার ওপার বাংলায় মুক্তি পেতে যাচ্ছে তার অভিনীত ‘ডিয়ার মা’। নতুন সিনেমাটির অফিসিয়াল পোস্টারে উল্লেখ রয়েছে, আগামী ১৮ জুলাই বড় পর্দায় আসছে এটি। এর ট্যাগলাইন রাখা হয়েছে, রক্তের সম্পর্ক না ভালোবাসার টান?

গতকাল (১৭ জুন) কলকাতায় পোস্টার উন্মোচন ও মুক্তির তারিখ ঘোষণার অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন জয়া আহসান। এরপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ডিয়ার মা’-এর পোস্টার শেয়ার করেছেন জয়া আহসান। পোস্টার প্রকাশের অনুষ্ঠানে আরো ছিলেন সিনেমাটির পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী, অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় ও চন্দন রায় সান্যাল, আবহ সংগীত ও গানের সুরস্রষ্টা বিক্রম ঘোষ।

‘ডিয়ার মা’-এর মাধ্যমে ১০ বছর পর আবার বাংলা সিনেমা পরিচালনা করলেন ৫৯ বছর বয়সী অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী। সর্বশেষ ২০১৪ সালে বাংল ভাষায় ‘বুনোহাঁস’ (দেব, শ্রাবন্তী) বানিয়েছিলেন তিনি। অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘পিঙ্ক’-এর এই পরিচালকের নতুন কাজ নিয়ে কৌতূহলী অনেকে। এর আগে তার পরিচালনায় ‘কড়ক সিং’-এ দেখা গেছে জয়াকে। এটাই তার প্রথম হিন্দি সিনেমা। ‘কড়ক সিং’ মুক্তি পায় ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জি ফাইভে।

‘ডিয়ার মা’ সিনেমার পোস্টার উন্মোচন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে জয়া আহসান (ছবি: ফ্লায়িং কালারস পিকচার্স)

‘ডিয়ার মা’ সিনেমায় রোজকার জীবনে মায়েদের শক্তির কথা তুলে ধরা হয়েছে। জয়ার জীবনে মায়ের অবদান অপরিসীম। এ প্রসঙ্গে পোস্টার উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমি মায়েরই বড় সংস্করণ। যত বড় হচ্ছি উপলব্ধি করছি, আমি মায়ের মতো হয়ে উঠছি। চেহারা, অনুভূতি, মন, মেজাজ, সব মায়ের মতো হয়ে যাচ্ছে। এগুলো দেখে মজাই লাগে। সন্তানধারণ থেকে শুরু করে মা হিসেবে এগিয়ে যাওয়া— আমার মা নিশ্চয়ই এসব সময় উপভোগ করেছেন। জীবনে চলার পথে মা আমার কাছে অনুপ্রেরণার।’

‘ডিয়ার মা’তে নিজের অভিনীত চরিত্র ফুটিয়ে তুলতে মায়ের একটি গুণের কথা বারবার মনে করেছেন জয়া। তার কথায়, ‘আমার মায়ের ভাবনাচিন্তা খুব গভীর। মায়ের সঙ্গে কিন্তু শারীরিক দূরত্ব রয়েছে আমাদের। সন্তানদের অতিরিক্ত জড়িয়ে ধরা বা খুব আদর করা, এগুলো মা করেননি। কিন্তু তা-ও মা-ই খুব কাছের। চতুর্থ শ্রেণি থেকে মায়ের সঙ্গে চিঠি লিখে কথা বলতাম। মায়ের মধ্যে দেখা এই গভীরতা চরিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।’

অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী (ছবি: এক্স)

জয়াকে ‘ডিয়ার মা’ সিনেমায় নাম ভূমিকায় নেওয়ার কারণ জানিয়ে পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী বলেন, “জয়াই এই চরিত্রের জন্য সঠিক, এটাই মনে হয়েছিলো। ‘কড়ক সিং’-এ তার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তার অভিনয় আমাকে খুব আকর্ষণ করে। নতুন সিনেমাটিতে জয়া অসাধারণ কাজ করেছে। টানা তিন মাস জয়া আমার সঙ্গে ওয়ার্কশপ করেছে। নিজের চরিত্র নিয়ে সে নিজেও অনেক ভেবেছে। সিনেমাটিতে তার অনেক অবদান আছে।”

‘ডিয়ার মা’-এ জয়ার স্বামীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ভারতীয় অভিনেতা চন্দন রায় সান্যাল। বলিউডে আমির খানের ‘রঙ দে বাসন্তী’, শহিদ কাপুরের ‘কামিনে’, ঐশ্বরিয়া রাইয়ের ‘জাজবা’, শাহরুখ খানের ‘জব হ্যারি মেট সেজাল’সহ বেশ কিছু সিনেমায় দেখা গেছে ৪৫ বছর বয়সী এই তারকাকে।

অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী ও জয়া আহসান (ছবি: ফেসবুক)

অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর পরিচালনায় এর আগে ‘অপরাজিতা তুমি’ (২০১২) সিনেমায় অভিনয় করেছেন চন্দন রায় সান্যাল। সেই সিনেমার নায়িকা তামিল-মালায়লাম তারকা পদ্মপ্রিয়া আছেন ‘ডিয়ার মা’-এ। গৃহকর্মীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনুভা ফতেপুরিয়া। বলিউডের ‘তেরি বাতো মে অ্যায়সা উলঝা জিয়া’য় শহিদ কাপুরের মায়ের ভূমিকায় দেখা গেছে তাকে। এটাই বাংলা সিনেমায় তার প্রথম কাজ।

বিশেষ একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। শিক্ষকের ভূমিকায় পর্দায় আসবেন ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও অভিনয় করেছেন শায়ান মুন্সি, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, সোনালি গুপ্ত বসু, সুশ্নাত ভট্টাচার্য, অহনা, নান্দিকা দাস।

জয়া আহসান (ছবি: ফেসবুক)

‘ডিয়ার মা’-এর গল্প লিখেছেন অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী ও শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য। ঝিমলি নামের একটি মেয়ের ৫ ও ১২ বছর বয়সের ঘটনা দেখা যাবে এই সিনেমায়। চিত্রগ্রহণ করেছেন অভীক মুখোপাধ্যায়। প্রযোজনায় ফ্লায়িং কালারস পিকচার্স, এবিপি ক্রিয়েশন্স, অপাস কমিউনিকেশন্স, এইস অব স্পেডস এন্টারটেইনমেন্ট।

পশ্চিমবঙ্গে জয়া এখন কৌশিক গাঙ্গুলীর পরিচালনায় ‘আজও অর্ধাঙ্গিনী’ সিনেমার শুটিং করছেন। ২০২৩ সালের ২ জুন মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অর্ধাঙ্গিনী’র সিক্যুয়েল এটি। এতে মেঘনা চরিত্রে আবার দেখা যাবে জয়াকে। সে সুমনের বর্তমান স্ত্রী। শুভ্রা চরিত্রে পশ্চিমবঙ্গের অভিনেত্রী চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায় ও সুমন চরিত্রে থাকছেন অভিনেতা কৌশিক সেন। আগের সিনেমায় শুভ্রা ও মেঘনার গল্প যেখানে শেষ হয়েছিল, সেখান থেকেই শুরু হবে নতুন গল্প।