Connect with us

টালিউড

দুই সপ্তাহ যেতেই নতুন সিনেমা নিয়ে আবার বড় পর্দায় জয়া

সিনেমাওয়ালা ডেস্ক

Published

on

‘পুতুলনাচের ইতিকথা’র দৃশ্যে আবির চট্টোপাধ্যায় ও জয়া আহসান (ছবি: ক্যালাইডোস্কোপ)

পশ্চিমবঙ্গে দুই সপ্তাহ পর আরেকটি নতুন সিনেমা নিয়ে বড় পর্দায় হাজির হলেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। তার অভিনীত ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ মুক্তি পেলো আজ (১ আগস্ট)। সুমন মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় এতে কুসুম চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। গত ১৮ জুলাই ভারতের বিভিন্ন শহরে মুক্তি পায় তার অভিনীত ‘ডিয়ার মা’। 

৯০ বছর আগে প্রকাশিত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয় উপন্যাস ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ অবলম্বনে তৈরি হয়েছে নতুন সিনেমাটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে তিরিশের দশকের শেষের দিক থেকে চল্লিশের দশকের শুরু পর্যন্ত সেই সময়ের সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়েছে এতে। একটি অজ পাড়াগাঁয়ের মানুষের জীবনের নানান রূপ-রস-গন্ধ নিয়ে সাজানো হয়েছে সিনেমাটি।

‘পুতুলনাচের ইতিকথা’র দৃশ্যে জয়া আহসান (ছবি: ক্যালাইডোস্কোপ)

‘পুতুলনাচের ইতিকথা’র গল্প শশী ও কুসুমকে কেন্দ্র করে। তাদের সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়েই এগোয় কাহিনি। শশীর ভূমিকায় পর্দায় আছেন আবির চট্টোপাধ্যায়। শশী শহর থেকে আসা গ্রামের চিকিৎসক। কুসুম সেই গ্রামের মেয়ে। সে নিজের যৌন আকর্ষণ লুকিয়ে রাখে না। কুসুম খোলা মনে তার প্রেমের কথা ভালোবাসার মানুষকে জানায়। কুসুমের নিজের কামনা-বাসনা লুকোয় না। কুসুম একটা খোলা বইয়ের মতো। কুসুমের মন, শরীর ও আত্মা সব একরকম। সে খোলা মনের সতেজ একটি চরিত্র। কুসুমের মধ্যে কোনও জড়তা নেই। এখানেই শশীর সঙ্গে তার পার্থক্য।

‘পুতুলনাচের ইতিকথা’র দৃশ্যে আবির চট্টোপাধ্যায় ও জয়া আহসান (ছবি: ক্যালাইডোস্কোপ)

শশীর মধ্যে এক ধরনের শহুরে রোমান্টিক ইন্টেলেকচুয়ালিজ়ম আছে। ফলে কুসুমের আড়াল না রেখে শরীর সম্পর্কিত প্রশ্নকে সে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারে না। তার শিক্ষিত শহুরে বুদ্ধিমত্তা ভাবতে শেখেনি যে, গ্রামের পড়ালেখা না জানা এক নারী সরাসরি শরীর নিয়ে কথা বলবে। কুসুমের প্রতি যৌন আকর্ষণ থাকলেও প্রকাশ করতে পারে না শশী। তার চরিত্রে অনেক রঙ আছে। শশী একদিকে যুক্তিবাদী, বিজ্ঞানে বিশ্বাসী ও নাস্তিক। অন্যদিকে দ্বিধা ও সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে সে। কলকাতায় পড়াশোনা করা শশী সে হাজার চেয়েও নিজের গ্রামের বাইরে পা রাখতে পারেনি। সে গ্রামে আটকে পড়ে। লন্ডনে গিয়ে ডাক্তারিতে উচ্চশিক্ষার ইচ্ছেপূরণ হয় না তার।

‘পুতুলনাচের ইতিকথা’র দৃশ্যে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, জয়া আহসান ও আবির চট্টোপাধ্যায় (ছবি: ক্যালাইডোস্কোপ)

সরল ও মিষ্টি মেয়ে মতি চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে খুবই রোমান্টিক। তার প্রতি শশীর একটা ভালে লাগা আছে। কিন্তু কীভাবে প্রেম করতে হয় জানে না মতি। তার বয়স কম বলে কুসুম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। কুমুদের চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। গল্পে তিনি অতিথি শিল্পী। ‘সেনদিদি’ চরিত্রে ফ্রেমবন্দি হয়েছেন অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। যাদব পণ্ডিতের ভূমিকায় আছেন ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে দেখা যাবে শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়কে।

সুমন মুখোপাধ্যায় (ছবি: ক্যালাইডোস্কোপ)

সুমন মুখোপাধ্যায়ের সর্বশেষ সিনেমা ‘অসমাপ্ত’ মুক্তি পায় ২০১৭ সালে। এরপর তিনি ‘নজরবন্দি’ নামের একটি সিনেমা তৈরি করলেও সেটি এখনো মুক্তি পায়নি। প্রায় আট বছর পর বড় পর্দায় এলো তার নতুন নির্মাণ ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’। তার বাবা অরুণ মুখোপাধ্যায় একসময় ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ মঞ্চায়ন করেছিলেন। সেই নাট্যরূপ ছিলো সুমনের সিনেমা তৈরির নেপথ্যে প্রথম অনুপ্রেরণা। ২০২২ সালে ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’র শুটিং হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে নেদারল্যান্ডসে ৫৪তম রটারড্যাম আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের বিগ স্ক্রিন প্রতিযোগিতা শাখায় এর উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়। সমীরণ দাসের নিবেদনে সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে ক্যালাইডোস্কোপ। আবহসংগীত করেছেন প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়।

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ