Connect with us

বলিউড

অভিনেতা ধর্মেন্দ্র আর নেই

সিনেমাওয়ালা ডেস্ক

Published

on

ধর্মেন্দ্র (জন্ম: ৮ ডিসেম্বর, ১৯৩৫; মৃত্যু: ২৪ নভেম্বর, ২০২৫)

বলিউডের প্রবীণ অভিনেতা ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন। আজ (২৪ নভেম্বর) সকালে মুম্বাইয়ে পরলোকগমন করেন তিনি। ভারতীয় সংবাদসংস্থা পিটিআই এই তথ্য জানিয়েছে। আগামী ৮ ডিসেম্বর ৯০ বছরে পা দেওয়ার কথা ছিলো তাঁর। কিন্তু আগেই পৃথিবী গ্রহকে বিদায় জানিয়ে দিলেন তিনি।

ধর্মেন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। মাঝে স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভেন্টিলেশনে ছিলেন। কিছুটা সুস্থ বোধ করায় বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হলো না। আজ নিজের বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর প্রস্থানের মধ্য দিয়ে ভারতীয় সিনেমার একটি যুগের অবসান ঘটলো।

ধর্মেন্দ্রর প্রয়াণে ভারতীয় সিনেমা জগতে শোকের ছায়া নেমেছে। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বলিউডের তারকারা। দেওল পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন অনেকে। তাঁর প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত ভক্তরা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, তিনি ধর্মেন্দ্রের অভিনয়ে মুগ্ধ ছিলেন। এক্স হ্যান্ডেলে মোদি শোকজ্ঞাপন করে লিখেছেন, ‘যেভাবে তিনি ভিন্ন ভিন্ন ধরনের সিনেমায় অভিনয় করেছেন, সেগুলোর সঙ্গে অগুনতি মানুষ একাত্ম বোধ করতে পারতেন। অভিনয়ের পাশাপাশি বিনয়, নম্রতা ও আন্তরিকতার জন্য ধর্মেন্দ্রকে মানুষ ভালোবেসেছে। তার পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব ও অসংখ্য গুণগ্রাহীর প্রতি এই দুঃখের মুহূর্তে আমার সমবেদনা রইলো।’

সোমবার মুম্বাইয়ের ‘পবনহংস’ শ্মশানে ধর্মেন্দ্রর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। ‘শোলে’ সিনেমায় ধর্মেন্দ্রর চরিত্রের নাম ছিলো বীরু। ‘বীরু’কে শেষবার দেখতে শ্মশানে হাজির হন ‘জয়’ রূপী অমিতাভ বচ্চন। তার সঙ্গে ছিলেন ছেলে অভিষেক বচ্চন ও নাতি অগস্ত্য নন্দা। এছাড়া শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শ্মশানে আসেন সালমান খান, আমির খান, সঞ্জয় দত্ত, অক্ষয় কুমার, শাবানা আজমি, দীপিকা পাড়ুকোন ও রণবীর সিং।

ব্যক্তিজীবনে দু’বার বিয়ে করেছেন ধর্মেন্দ্র। বড় পর্দা ও পর্দার বাইরে হেমা মালিনীর সঙ্গে তার রসায়ন বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় প্রেমকাহিনি। ধর্মেন্দ্রর এক সংসারে আছে ছেলে সানি দেওল ও ববি দেওল। অন্য সংসারে আছে মেয়ে এষা দেওল ও অহনা দেওল। কিছুদিন আগে তাঁর মৃত্যুর ভুয়া খবর ছড়ানোর কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন দেওল পরিবারের সদস্যরা।

এদিকে আজই প্রকাশ্যে এসেছে ধর্মেন্দ্র অভিনীত নতুন সিনেমা ‘ইক্কিস’-এর ঝলক। এটি পরিচালনা করেছেন শ্রীরাম রাঘবন। ১৯৭১ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার যুদ্ধে সহায়তাকারী দেশ ভারতের ২১ বছর বয়সী এক তরুণের বীরোচিত গল্প থাকছে এতে।

ধর্মেন্দ্র (জন্ম: ৮ ডিসেম্বর, ১৯৩৫; মৃত্যু: ২৪ নভেম্বর, ২০২৫)

১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর লুধিয়ানার সাহনেওয়াল গ্রামে জন্মগ্রহণ করে ধরম সিং দেওল। ‘ভারতীয় সিনেমার হি-ম্যান’ নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। অনেকে ভালোবেসে ডাকতেন ‘ধরম পাজি’। ছয় দশকেরও বেশি সময়ের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে অ্যাকশন ও আবেগের মিশেলে দর্শকদের মন জয় করে একের পর এক ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। রোমান্টিক নায়ক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু হলেও ধীরে ধীরে মারকুটে অ্যাকশন হিরো বনে যান ধর্মেন্দ্র। তার জনপ্রিয় একটি সংলাপ, ‘চুন চুনকে মারুঙ্গা!’ তারকাখ্যাতির বাইরে তিনি বিনয়ী, হৃদয়বান ও প্রাণবন্ত একজন মানুষ ছিলেন।

ফিল্মফেয়ার আয়োজিত একটি ট্যালেন্ট হান্টের মাধ্যমে বিনোদন জগতে নাম লেখান ধর্মেন্দ্র। এর মাধ্যমে সিনেমায় সুযোগ খুঁজতে মুম্বাইয়ে পাড়ি জমাতে উৎসাহিত হন তিনি। ১৯৬০ সালে অর্জুন হিঙ্গোরানির ‘দিল ভি তেরা হম ভি তেরে’র মাধ্যমে বড় পর্দায় প্রথমবার হাজির হন। ১৯৬১ সালে ‘শোলা অওর শবনম’ সিনেমায় প্রথম বড় হিটের দেখা পান শিখ-জাঠ বংশোদ্ভূত এই সুদর্শন নায়ক। এরপর তিনি অভিনয় করেন ‘আনপড়’ (১৯৬২) ও বিমল রায়ের ‘বন্দিনী’তে (১৯৬৩)। তার কালজয়ী সিনেমার তালিকায় আছে ‘হকিকত’, ‘শোলে’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘সত্যকাম’, ‘অনুপমা’, ‘ধর্মবীর’, ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ ইত্যাদি। প্রতিটি সিনেমায় তার অভিনয়ের ভিন্ন দিক প্রকাশ পেয়েছে। হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘গুড্ডি’তে (১৯৭১) ধর্মেন্দ্র অভিনয় করেন ধর্মেন্দ্রর ভূমিকায়। ভারতীয় সিনেমায় তাঁর অবদান প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ