Connect with us

ওটিটি

ফিল্মমেকার জাহিদুর রহিম অঞ্জন মারা গেছেন

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

জাহিদুর রহিম অঞ্জন (ছবি: ফেসবুক)

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী ফিল্মমেকার, বাংলাদেশ শর্টফিল্ম ফোরামের সাবেক সভাপতি ও শিক্ষক জাহিদুর রহিম অঞ্জন মারা গেছেন। গতকাল (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টা ৩০ মিনিটে ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিলো ৬০ বছর।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জাহিদুর রহিম অঞ্জন কয়েক বছর ধরে লিভারের জটিলতায় ভুগছিলেন। কয়েক মাস ধরে বেঙ্গালুরুর স্পর্শ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তার লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করেছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু অপারেশন পরবর্তী জটিলতায় এই গুণী নির্মাতার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এ কারণে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। কিন্তু তাকে বাঁচানো গেলো না।

আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে অঞ্জনের মরদেহ ঢাকা নিয়ে আসা হবে। সেদিন রাতে ইস্কাটন বিয়াম স্কুল মসজিদে রয়েছে প্রথম জানাজা। পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের সময় দ্বিতীয় জানাজার জন্য নেওয়া হবে সিদ্ধেশ্বরী স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে। এরপর পরিবারের সদস্যরা মরদেহ নেবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে। সেখানে বাদ জোহর তৃতীয় জানাজা শেষে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দুপুর ১টা ৩০ মিনিট থেকে ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত রাখা হবে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে। সবশেষে আজিমপুর কবরস্থানে মায়ের কবরে তাকে দাফন করা হবে।

ভাষাসৈনিক মিজানুর রহিমের সন্তান জাহিদুর রহিম অঞ্জন। সাহিত্যিক শাহীন আখতার তার স্ত্রী। তিনি স্ত্রী, দুই ভাই, এক বোন, অনেক বন্ধু ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক প্রকাশ ও স্মৃতিচারণ করেছেন অনেকে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংস্কৃতি উপদেষ্টা ও ফিল্মমেকার মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, নির্মাতা অমিতাভ রেজা, গিয়াস উদ্দিন সেলিম, আকরাম খান।

জাহিদুর রহিম অঞ্জন ভারতের পুনে ফিল্ম ইনস্টিটিউটে ফিল্ম বিষয়ে ডিগ্রি নিয়েছেন। তিনি স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করতেন। বাংলাদেশ শর্টফিল্ম ফোরামের সাবেক সভাপতি তিনি।

‘মেঘমল্লার’ সিনেমায় শহীদুজ্জামান সেলিম (ছবি: বেঙ্গল ক্রিয়েশন্স)

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে মুক্তি পায় জাহিদুর রহিম অঞ্জন পরিচালিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘মেঘমল্লার’। কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘রেইনকোট’ গল্প অবলম্বনে তৈরি হয় এটি। এ সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সেরা পরিচালক ও সেরা সংলাপ রচয়িতা হিসেবে দুটি স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি।

সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর ‘মনসমীক্ষামূলক’ উপন্যাস অবলম্বনে সরকারি অনুদানে ‘চাঁদের অমাবস্যা’ নামের একটি সিনেমা পরিচালনা করেন জাহিদুর রহিম অঞ্জন। এর পুরো শুটিং হয়ে গেলেও তিনি নিজের অসুস্থতার কারণে এটি মুক্তি দিতে পারেননি।

জাহিদুর রহিম অঞ্জনের জন্ম ১৯৬৪ সালের ২৭ নভেম্বর। ১৯৮৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি ও ১৯৯০ সালে ভারতের পুনে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট থেকে ‘ডিরেকশন অ্যান্ড স্ক্রিপ্টরাইটিং’-এর ওপর স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা অর্জন করেন। তিনি স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। এছাড়া তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সিনেমা অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট (বিসিটিআই) ও পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যুক্ত ছিলেন।

মন্তব্য করতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ