আলাপচারিতা
আমার ক্যারিয়ার কিন্তু একদিনে হয় নাই, অনেক সংগ্রাম করেছি: আফরান নিশো
জনপ্রিয় অভিনেতা আফরান নিশোর অভিষেক হতে যাচ্ছে বড় পর্দায়। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘সুড়ঙ্গ’ মুক্তি পাবে ঈদুল আজহায়। এর ফার্স্ট লুক, অফিসিয়াল পূর্বাভাস ও আইটেম গান প্রকাশের পর দারুণ সাড়া পাচ্ছেন তিনি। আলফা-আই স্টুডিওস ও চরকির প্রযোজনায় এতে মাসুদ চরিত্রে দেখা যাবে তাকে। প্রথমবার রুপালি পর্দায় কাজ করা উপলক্ষে সিনেমাওয়ালা নিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় ১০ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি।
সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘সুড়ঙ্গ’র অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবা হচ্ছে শাকিব খানের ‘প্রিয়তমা’কে। ফলে আসন্ন ঈদুল আজহায় সিনেমাহলে জমজমাট লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন?
আফরান নিশো: আমার মনে হয়, সুস্থ প্রতিযোগিতা থাকলে ইন্ড্রাস্ট্রির জন্য ভালো। এতে ইন্ড্রাস্ট্রির উন্নতি হবে। আমি মনে করি, প্রতিযোগিতা সবসময় ছিলো। কারণ প্রতিযোগিতা না থাকলে আমি চ্যালেঞ্জ অনুভব করি না। নাটকে কাজ করার সময়ও অন্যদের সঙ্গে আমাকে নিয়ে আলোচনা সবসময়ই ছিলো। সেটা ভিউ, ভালো কাজ কিংবা ভক্তদের ক্ষেত্রে হোক। আর ভক্তদের মধ্যে উন্মাদনা থাকবেই, কারণ তারা অনেক আবেগী। আমার কাছে মনে হয়, ভক্তদের দায়িত্বশীল থাকতে হয়। কারণ তারা আমার প্রতিনিধিত্ব করে। আমার ভক্তদের প্রতি সেই দায়িত্ববোধের জায়গাটা ধরে রাখার অনুরোধ জানাই।
আমার ক্যারিয়ারটা দীর্ঘদিনের হলেও জানি আমি সবসময় থাকবো না। এটাই নিয়ম। এর ফলে একজনের পর আরেকজন আসে। তাই আমার ক্ষুধা অভিনয়ে। আমি অভিনয় করে যাবো। একটু ভিন্নধর্মী চরিত্র পেলে আমার জন্য বরং সহজ হয়। আমার মতে, একজন অভিনয়শিল্পীকে সব ধরনের চরিত্রে কাজ করা উচিত। দর্শকদের চিন্তাধারা বদলেছে, তারা সব ধরনের কাজ গ্রহণ করছেন। এজন্য চরিত্রনির্ভর অভিনয়শিল্পীরা উঠে এসেছেন।
সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘সুড়ঙ্গ’র পূর্বাভাস প্রকাশের পর আপনার অনেক সহকর্মী এটি শেয়ার দিয়ে শুভকামনা জানিয়েছেন। এসব দেখে কেমন লেগেছে?
আফরান নিশো: এটা আমার কাছে বিস্ময়কর ঘটনা এবং অবাক করার মতো। আমরা যারা একই অঙ্গনে কাজ করি, তাদের সবারই ব্যক্তিস্বাধীনতা থাকে। কোনও কিছু ভালো লেগে গেলে হয়তো আমরা স্বেচ্ছায় বরণ করি। এছাড়া দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করলে আলাদা দায়িত্ববোধ তৈরি হয়। কোনও সহকর্মী যদি নতুন কিছুতে পদার্পণ করে তখন একটা দায়িত্ববোধের ব্যাপার চলে আসে। এতো বছর ছোট পর্দায় কাজ করার পর বড় পর্দায় আসছি বলে অনেকে হয়তো দায়িত্ব ভেবে শুভকামনা জানিয়েছে। বিয়ের সময়ও আমরা এভাবে শুভকামনা জানিয়ে থাকি।
ব্যক্তিজীবনে আমি আবেগপ্রবণ মানুষ। অপরিচিতদের সামনে আমি চাপা স্বভাবের। কিন্তু বন্ধুমহলে ও কাছের মানুষদের কাছে খুবই প্রাণখোলা। আমি সবাইকে মন থেকে ধন্যবাদ ও ভালোবাসা জানাচ্ছি। মনে হচ্ছে, আমরা যারা একই অঙ্গনে কাজ করি, তাদের মধ্যে ভালোবাসা ফুরিয়ে যায়নি। আমরা একে অপরের প্রতি যে দায়িত্ববোধের কথা বলি, সেটি হয়তো ফুরিয়ে যায়নি। একইসঙ্গে নিজেকে অনেক ছোট মনে হয়! মাঝে মধ্যে ভাবি, আমি কি অন্যদের মতো উদার কিংবা তাদের মতো দায়িত্বজ্ঞান আমার আছে কিনা। কোনো কিছুতে অন্যের পদচারণা যদি ভালো লেগে যায়, তাহলে উৎসাহ দিলে অনুপ্রাণিত হতে পারে। সেটা যে কারো ক্ষেত্রেই। আমার প্রতি অন্যদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ দেখে আমার ভালোবাসাও জাগ্রত হচ্ছে।
সিনেমাওয়ালা নিউজ: আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিষ্ক্রিয় বলা চলে! আপনার প্রতি অন্যদের ভালো লাগা দেখে ফেসবুকে সক্রিয় হওয়ার কথা ভাববেন?
আফরান নিশো: সোশ্যাল মিডিয়া এখন এমন হয়ে গেছে যে, মানুষ অনেক জাজমেন্টাল। ধরুন একটি কবিতা লিখলাম, সেটি যদি ব্যর্থ প্রেমের কবিতা হয় তাহলে মানুষ ভাববে নিশো প্রেমে ব্যর্থ! এটি যে অন্যের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা থেকে আমার ভাবনায় আসতে পারে, সেটি না বুঝে সবাই মনে করবে এটাই আমার জীবন। হয়তো আমার এমনিতেই একটি স্ট্যাটাস দিতে ইচ্ছে হলো, সেটি আমার জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত না হলেও মানুষ সেটাই ধরে নেবে। আমার বাবা, মা কিংবা ভাইয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে লিখলেও ধারণা সেই একই হবে। এসব কারণে লিখতে একটু ভয় পাই।
তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় সবসময় কোনো কাজ ছাড়াই একের পর এক রিল দেখতে থাকা আমার কাছে রোগের মতো মনে হয়। এখনকার মানুষের এটি বদভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আমার চিন্তা হয়, আমিও যদি এতে আসক্ত হয়ে যাই তাহলে নিজের মতো বেঁচে থাকা ও ভাবনার আনন্দ ব্যাহত হবে। যদিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকা দরকার। এটিও এক ধরনের স্মার্টনেস। আমার মনে হয়, কোনো সমস্যা কিংবা ঘটনা নিয়ে মতামত জ্ঞাপন করা শিল্পীসত্তার দায়িত্ব। অনেক সময় ভাবি– চুপ করে থাকবো কেনো, বরং কিছু কথা বলি। এখন বুঝতে পারছি, সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার একটু সক্রিয় থাকা দরকার।
সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘সুড়ঙ্গ’ নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কী?
আফরান নিশো: আমরা অনেক বড় একটি টিম অনেক দিন ভেবে ও খেটে একটি বিন্দুতে আসতে পেরেছি। সেজন্য এই সিনেমা করা সম্ভব হয়েছে। আমাদের সবার ডেডিকেশন, সময় ও অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে এতে। কেউ যদি কোনো কাজে কষ্ট করে, পর্দায় সেই প্রতিফলন পাওয়া যায়। এটা বলে বোঝাতে হয় না। আমাদের কষ্ট যদি স্ক্রিনে ফুটে ওঠে তাহলেই পুরো ইউনিট সার্থক।
আমরা যদি সব মিলিয়ে এই সিনেমায় ১০০ জন কাজ করে থাকি, প্রত্যেকের ভাবনা ছিলো একই। আমরা এতো মানুষ মিলে একবিন্দুতে এসে একটা গল্প বলার চেষ্টা করেছি। সেই গল্প দেখে মানুষ নিজেদের সংযোগ ঘটাতে পারলে, তাদের জীবনের সঙ্গে এটি মিলে গেলে কিংবা তাদের ভাবালে আমরা সফল হবো। সিনেমাটির প্রত্যেক চরিত্রই এমন যে, দর্শকরা মনোযোগ দিয়ে সিনেমাটি দেখলে নিজেদের সঙ্গে মেলাতে পারবেন। অভিজাত শ্রেণি থেকে নিম্নবিত্তসহ সবশ্রেণির দর্শকের জীবনের সঙ্গে মিলে যাবে গল্পটা। কারণ এখানে অনেক স্তর আছে।
সিনেমাওয়ালা নিউজ: মাসুদ কেন সুড়ঙ্গ খুঁড়ছে?
আফরান নিশো: সুড়ঙ্গটা কিন্তু রূপক। আমরা ফার্স্ট লুক ও পূর্বাভাসে দেখেছি মাটি খোঁড়া হচ্ছে, কিন্তু প্রশ্ন হলো– মাসুদ কেন সুড়ঙ্গ খুঁড়ছে, কোথায় খুঁড়ছে? এর আগে কি কেউ ওর মনের মধ্যে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ফেলেছে নাকি সুড়ঙ্গটা খোঁড়াই ছিলো আর মাসুদ সেটাতে নামে, এমন অনেক প্রশ্ন কিন্তু থাকছে। এমনও তো হতে পারে, মাসুদ বিপদে পড়েনি কিন্তু তার বন্ধু বিপদে ফেলে দিয়েছে। তাহলে সুড়ঙ্গটা কে করলো? মাসুদের বন্ধু? আক্ষরিক অর্থে শুধুই খোঁড়াখুঁড়ি নয় এই গল্প। এর ভেতরে অন্য একটি সুড়ঙ্গ আছে।
সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘সুড়ঙ্গ’র ভেতরে শুটিং নিশ্চয়ই চ্যালেঞ্জিং ছিলো?
আফরান নিশো: আগে থেকে জানতাম– আমাকে এমন একটি জায়গায় কাজ করতে হবে, যেখানে চাইলেই দাঁড়ানো যাবে না এবং নড়াচড়া করা আমার জন্য এতো সহজ হবে না। শুধু আমার বেলায় নয়, কারিগরি কাজে সম্পৃক্ত সবাইকে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। যখন ঝড় আসে আমরা আগে থেকে জানতে পারি বলে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকি। যেমন করোনার শুরুর সময় লকডাউনের জন্য আমরা কেউই প্রস্তুত ছিলাম না। ধীরে ধীরে আমরা মেনে নিতে পেরেছি, এজন্য পরে সমস্যাটা কম হয়েছে। আমরা কোনো ব্যাপারে মানসিকভাবে চ্যালেঞ্জ নিলে অর্ধেক কাজ সহজ হয়ে যায়।
‘সুড়ঙ্গ’ একটা দীর্ঘ সময়ের কাজ। তাই আমাদের কী কী সমস্যা হতে পারে সেসব আমরা আগেই আলোচনা করেছি। শ্বাসকষ্ট হলে ব্যাকআপ লাইন কী, অক্সিজেনের জোগান নির্বিঘ্ন থাকবে কিনা, প্রাকৃতিক বাতাসের সম্ভাবনা আছে কিনা ইত্যাদি নিয়ে আমাদের পূর্বপ্রস্তুতি ছিলো। আমরা জানতাম, শ্বাসকষ্টের মতো যেকোনো বিপর্যয় ঘটতে পারে। শুটিংয়ে গিয়ে দেখলাম– আমি না হয় অভিনেতা হিসেবে কাজ করছি, কিন্তু ইউনিটের লোকজন আরো বেশি কষ্ট করছে। সেই বিষয়টি আমাকে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরো সাহস জুগিয়েছে। তখন ভাবতাম আমার চেয়েও বেশি কষ্ট করছে অন্যরা। তবে একদিনে তিনটি দৃশ্যধারণের পরিকল্পনা থাকলেও ৫-১০ মিনিট পরপর সবাই ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছিলো আর ‘সুড়ঙ্গ’টা বেশ বড় ছিলো। ফলে সময় বেশি যাওয়ায় একদিনে দুটির বেশি দৃশ্যের কাজ করতে পারিনি।
একটা বিষয় ঠিক করেছিলাম যে, আমার সমস্যা হলেও আওয়াজ খুব একটা দেবো না। কারণ আওয়াজ ছোট থাকলে সমস্যা ছড়ায় কম। আমার সমস্যা হলেও ইউনিটকে খুব একটা বুঝতে দিতাম না। তারাও একই মানসিকতা ধরে রেখে নিজেরা কিছু বলতো না। ‘সুড়ঙ্গ’তে কাজ করা আমার জন্য নতুন একটা অভিজ্ঞতা। সব মিলিয়ে ভালো আর আমি ধন্য যে, এমন একট ইউনিট পেয়েছি।
সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘সুড়ঙ্গ’র শুটিংয়ের সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা কোনটি?
আফরান নিশো: মনে রাখার মতো ঘটনা প্রতি পদে পদেই ঘটেছে। প্রথম ধাপের শুটিংয়ের একটা ব্যাপার বলি। আমরা তখন সুনামগঞ্জের নীলাদ্রি লেক এলাকায়। সেকানে থাকা-খাওয়ার খুবই কষ্ট। সহজে হোটেল পাওয়া যায় না। তাই আমরা যেভাবে কাজ করে অভ্যস্ত সেরকম পরিস্থিতি ছিলো না। আমি যেরকম ভেবেছিলাম– প্রতিদিন সবাই শুটিং শেষে রাতে আলোচনা করবো, আবার সকালে উঠে সবাই সবার চেহারা দেখবো। কিন্তু একেকজন একেক জায়গায় থাকায় সেসব হয়নি। শুটিংয়ের পর একটু আলোচনা সেরেই যে যার ঘরে চলে যেতাম। কারণ একটা রুম থেকে আরেকটি রুমের দূরত্ব ছিলো অনেক। ইউনিটের লোকজন, পরিচালক, অভিনেত্রী, অন্য অভিনয়শিল্পী, কারিগরি কাজে সম্পৃক্তসহ সবাইকে একেক জায়গায় থাকতে হয়েছে। তবে থাকার ব্যাপারে বেশ কষ্ট হলেও সবাই মুখ বন্ধ করে কাজটা করেছে। এমন সহযোগিতাপ্রবণ মনোভাব আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। তাদের কাছ থেকে সহায়তা করার মানসিকতা শিখেছি। আমার মনে হয়েছে, সবাই কষ্ট করার জন্য এক হতে পারার কোনো না কোনো কারণ আছে। নীলাদ্রিতে আমরা প্রায় ৪০ দিনের মতো শুটিং করেছি। হোটেল ভালোভাবে পেলে ২০-২২ দিনে কাজ শেষ হতো।
সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘কলিজা আর জান’ গানে নাচের অভিজ্ঞতা কেমন হলো শুনি।
আফরান নিশো: গানটির কোরিওগ্রাফি করেছেন কলকাতার বাবা যাদব। তিনি নাচের মুদ্রা দেখানোর পর পর্যবেক্ষণ করেছেন আমি কীসে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি কিংবা আমাকে দিয়ে কেমন নাচ হবে। এমন কোনো কঠিন মুদ্রা তিনি সাজাতে চাননি যেটি আমার জন্য কঠিন হবে কিংবা আমি মানিয়ে নিতে পারছি না। আমি নাচের ব্যাপারে অনেকটাই কাঁচা। তবুও আমি নেচেছি আর তিনি বলছিলেন, ‘হয়ে গেছে। শুধু স্পৃহার মাত্রা বাড়ালেই চলবে।’ গানটিতে আমার এতো বেশি নাচ নেই। নুসরাত ফারিয়ার নাচই বেশি। আমাকে তিনি শুধু বলেছেন, চরিত্রের মধ্যে থাকলেই চলবে।
নাচ-গানে ভরপুর বিষয়টা আমি তেমন পছন্দ করি না। আমার নাটকের ক্ষেত্রেও একটু বাস্তবিক ব্যাপার চাই বরাবরই, জানি না হয় কিনা। কিন্তু আমি চাই যতটা সম্ভব বাস্তবসম্মত অভিনয় করা যায়। সিনেমার ক্ষেত্রেও আমি মনে করি, যখন যে বিষয় প্রয়োজন তখনই সেটি থাকা উচিত। ‘সুড়ঙ্গ’ গল্পে আমার চরিত্রের নাম মাসুদ। শুটিংয়ে আমরা বলাবলি করতাম, মাসুদ তুমি ভালো হয়ে যাও! মাসুদ যখন স্বাভাবিক থাকে না কিংবা মদ্যপ হয়ে যায়, তখন বন্ধু তাকে আরাম-আয়েশের জন্য একটা জায়গায় নিয়ে যায়। গানটির কথায় বোঝানো হয়েছে, টাকাই মুখ্য। নারীর চেয়েও টাকার প্রতি মাসুদের নেশা বেশি। সেক্ষেত্রে আমি এটিকে আইটেম গান বলবো না! এটি গল্পের সঙ্গে সংযোগ ঘটাতে যৌক্তিক কারণেই জায়গা পেয়েছে।
সিনেমাওয়ালা নিউজ: ময়নাকে নিয়ে কিছু বলেন।
আফরান নিশো: ময়না হলো মাসুদের বউ। ময়নাকে নিয়ে বললে স্পয়লার হয়ে যাবে। বরং তমা মির্জাকে নিয়েই বলি। আমার মনে হয়নি তার বিপরীতে প্রথমবার কাজ করছি। সে হয়তো খুব বিনয়ী ও নম্র। তমা খুব ভালোভাবে পরিস্থিতি আয়ত্ত্বে নিতে পারে।
চিত্রনায়িকারা কেমন হয় আমি জানি না, কারণ আগে কখনো বড় পর্দার নায়িকাদের সঙ্গে কাজ করিনি। ছোট পর্দায় মেহজাবীন চৌধুরী, নুসরাত ইমরোজ তিশা ও তানজিন তিশার ডেডিকেশন আমার দেখা। সেদিক থেকে তমাকে আলাদা লাগেনি। আমার কাছে তাকে কাছের মানুষ মনে হয়েছে। সে অনেক মিশুক। একইসঙ্গে তার মধ্যে অভিনয়ের ক্ষুধা আছে।
সেজন্য অনেক সময় নিজের দৃশ্য না থাকলেও সে বসে দেখতো, পর্যবেক্ষণ করতো। একজন নায়িকার ক্ষেত্রে এগুলো অনেক ইতিবাচক বিষয়। তারকাসুলভ ব্যাপার তার মধ্যে দেখিনি। সে ভালো মানুষ এবং কাজের প্রতি অনেক ডেডিকেটেড। একবার না হলে বারবার দেওয়ার যে প্রবণতা তার মধ্যে দেখেছি, তাতে তার প্রতি আমার সম্মান ও আস্থা বেড়েছে। আমার কাছে মনে হয়, এমন সহশিল্পী সবার কাছে কাঙ্ক্ষিত।
সিনেমাওয়ালা নিউজ: রায়হান রাফীর পরিচালনায় প্রথমবার কাজ করলেন। তার সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেকের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কী ভেবে?
আফরান নিশো: আমার কাজ হলো পারফরম্যান্স দিয়ে পরিচালককে খুশি করা। ছোট হোক বড় হোক, প্রত্যেক পরিচালককে তার মর্যাদা দেই। রাফী যখন শর্টফিল্ম বানাতো তখন থেকে তার কাজ আমার ভালো লাগে। সে অনেক তরুণ, প্রাণচঞ্চল ও আত্মবিশ্বাসী। রাফির আগের শর্টফিল্মগুলো দেখার সময় থেকে তার ব্যাপারে জানতাম। সে কোরআনে হাফেজ। একজন কোরআনে হাফেজ এভাবে কন্টেন্ট বানাচ্ছে দেখে অবাক হতাম। প্রত্যেকেরই নিজস্ব দর্শন থাকে। আমি মনে করি– যেকোনো মানুষ নিজের মধ্যে একজন শিল্পীকে খুঁজে পেতে পারে, নিজেকে শিল্পী দাবি করতে পারে।
রাফীর সঙ্গে আমার অনেকবার আলোচনা হয়েছে। এর আগেও একটি সিনেমায় কাজ করার কথা ছিলো আমাদের। কিন্তু সেটি পরে হয়নি। এরপর ‘সুড়ঙ্গ’র গল্পটা এলো। রাফী অনেক আগেই আমাকে বলে রেখেছে, এই কাজটি আমাকে নিয়ে করবে। একদিন হঠাৎ সে জানায়, এবার ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমাটি বানাবে। তখন তাকে জিজ্ঞেস করি, গল্পটিতে সিনেমার সম্ভাবনা আছে কিনা। সে বললো– শতভাগ আছে। কোনো কিছুতে অপূর্ণতা থাকলে নতুন কিছু সংযোজন করা হবে। সে এই সিনেমা বড় পরিসরে করতে চেয়েছে, কারণ এটা ওর স্বপ্নের মতো। পরবর্তী সময়ে আমরা অনেকবার বসে গল্প, বাজেট, কারিগরি টিমসহ সব বিষয়ে আলোচনা করি। তখন থেকে সিনেমাটিতে বড় কিছু দেখতে পেয়েছি।
রাফী নিজে বলার পাশাপাশি অভিনয়শিল্পীদের মতামত শোনে, এটা তার অনেক ভালো একটি দিক। অনেক সময় আমার ভাবনা শেয়ার করতাম। সবার কথা শুনে দিন শেষে সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হয়েছে, কারণ সে সিনেমাটির ক্যাপ্টেন। রাফী পরিশ্রমী ছেলে। সে দিনে দিনে পরিণত হয়েছে। আমার ক্যারিয়ারও কিন্তু একদিনে হয় নাই, আমিও অনেক সংগ্রাম করেছি।
‘সুড়ঙ্গ’তে আমার অনেক কিছুই প্রথম। রাফীর পরিচালনায় এটি আমার প্রথম কাজ। তমা মির্জার বিপরীতে প্রথমবার কাজ করেছি। চিত্রগ্রাহক সুমন সরকারের সঙ্গে যদিও আমার পরিচয় অনেক আগে, কিন্তু সে আর আমি প্রথমবার কাজ করেছি একই সিনেমায়। আলফা-আই স্টুডিওসের প্রযোজনায় আমার প্রথম কাজ এটি।
-
ছবি ও কথা1 year ago
তাসনিয়া ফারিণের বিয়ের কিছু ছবি
-
বলিউড2 years ago
‘ব্রহ্মাস্ত্র’ নিয়ে ক্যাটরিনার মধুর প্রতিশোধ!
-
নাটক2 years ago
আমেরিকায় ফুরফুরে মেজাজে মেহজাবীন-তানজিন তিশা-ফারিণ
-
ওয়ার্ল্ড সিনেমা1 year ago
বুসানে ফারুকী-তিশার সিনেমা দেখতে দর্শকদের ভিড়
-
ঢালিউড1 year ago
রাষ্ট্রপতি সিনেমাহলে সপরিবারে ‘প্রিয়তমা’ দেখলেন
-
ওয়ার্ল্ড সিনেমা1 year ago
‘জেলার’ হিট হওয়ায় ১০০ কোটি রুপি ও বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার পেলেন রজনীকান্ত
-
ঢালিউড1 year ago
শাকিবের ‘প্রিয়তমা’ কলকাতার এই নায়িকা
-
ঢালিউড2 years ago
‘বিউটি সার্কাস’: এমন চরিত্রে আর অভিনয় করবো না: ফেরদৌস