Connect with us

আলাপচারিতা

বাংলাদেশি হয়ে কলকাতার সিনেমা পরিচালনা করতে পারা আমার জন্য সম্মানের: সঞ্জয় সমদ্দার

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

সঞ্জয় সমদ্দার (ছবি: অপূর্ব ফটোগ্রাফি)

ওপার বাংলার সুপারস্টার জিতের অভিনয় ও প্রযোজনায় ‘মানুষ’ মুক্তি পেয়েছে গত ২৪ নভেম্বর। এর মাধ্যমে বড় পর্দায় যাত্রা শুরু করলেন পরিচালক সঞ্জয় সমদ্দার। তিনিই সিনেমার গল্প লিখেছেন। এখন ওপার বাংলার দর্শকদের প্রশংসায় ভাসছেন এই নির্মাতা। তবে মেয়ের অসুস্থতার কারণে দেশে ফিরে এসেছেন। সিনেমাওয়ালা নিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় ১০ প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: দেশে চলেন এলেন যে?
সঞ্জয় সমদ্দার: কলকাতায় একটি প্রচারণামূলক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু আমার মেয়ে দিজুর অসুস্থতার কথা জানানোর পর জিৎ দাদা বলেন, ‘আগে সন্তানের খেয়াল রাখো।’ তিনি সবসময় পরিবারকে প্রাধান্য দেন। এটা তার বড় একটা গুণ।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: সিনেমা মুক্তির পর জিৎ কী বললেন?
সঞ্জয় সমদ্দার: জিৎ দাদা অনেক খুশি। তিনি লাইভে আমার কাজের প্রশংসা করেছেন। আমার সঙ্গে আবার কাজ করার ইচ্ছের কথাও জানিয়েছেন। তার মুখে এটা শোনার পর ভীষণ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। একজন সুপারস্টারের মুখে আলাদাভাবে আমার কথা শুনে খুব ভালো লেগেছে।

সঞ্জয় সমদ্দার ও জিৎ (ছবি: ফেসবুক)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: জিতের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের কথা নিশ্চয়ই ভোলেননি?
সঞ্জয় সমদ্দার: জিৎ দাদার সঙ্গে সেই সাক্ষাৎ আজীবন মনে থাকবে। কলকাতায় গ্রাসরুট এন্টারটেইনমেন্টের গোপাল মাদনানি দাদার রুমে বসলাম। জিৎ দাদা লাঞ্চ করে এলেন। তিনি একজন প্রাণবন্ত মানুষ। তার একটা পরিমণ্ডল আছে, যেটা ইতিবাচকভাবে ছড়িয়ে পড়ে অর্থাৎ মানুষকে অনুপ্রেরণা দেয়। তার যে দিকটি আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে তা হলো মানুষকে তিনি সম্মান করেন। সেদিন প্রথমেই জানতে চাইলেন, ‘কী খাবেন?’ একটা কিছু হলেই চলবে বললাম। তিনি বললেন, ‘খাওয়া হলো স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যাপার, যেকোনো একটা কিছু হলে কীভাবে হবে?’ এরপর যোগ করলেন, ‘ভাত তো খাবেন, সঙ্গে কী রাখবো আর?’ তিনি ভেটকি মাছের পাতুরি অর্ডার দিলেন। খাওয়া তো মুখ্য নয়, আন্তরিকতাই আসল। যে সময়ে পৌঁছেছিলাম তখন লাঞ্চের সময় হয়ে গিয়েছিলো। তিনি এটি খেয়াল রেখেছিলেন। মানুষ হিসেবে তিনি সত্যিই দারুণ।

সঞ্জয় সমদ্দার (ছবি: ফেসবুক)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: বাংলাদেশের পরিচালক হলেও নিজের প্রথম সিনেমা বানালেন টালিগঞ্জে, তার ওপর এতে অভিনয় ও প্রযোজনা করেছেন ওপার বাংলার সুপারস্টার জিৎ। স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো না ব্যাপারটা?
সঞ্জয় সমদ্দার: স্বপ্নের চেয়েও বড় দিক হলো, এটা আমার জন্য সম্মানের। আমি খুব সৌভাগ্যবান যে, এমন একটি সুযোগ পেয়েছি এবং জিৎ দাদা আমাকে ডেকেছেন। এটি সত্যিই আনন্দের। নিজের দায়িত্বের জায়গা থেকে একটি পরিচ্ছন্ন ও ভালো সিনেমা নির্মাণের চেষ্টা করেছি। আমার ভাবনায় ছিলো– যদি ভালো কাজ করতে পারি তাহলে অন্য পরিচালকেরা অনুপ্রাণিত হবেন। আমার সমসাময়িক কিংবা পরে যারা নির্মাণে আসবেন তাদের মনে বিশ্বাস জন্মাবে যে, পরিচালকদের কোনো সীমান্ত থাকে না। তারা সুযোগ পেলে অন্যান্য ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও কাজ করতে পারবেন।

‘মানুষ’ সিনেমার দৃশ্যে জিৎ ও অয়ন্যা (ছবি: গ্রাসরুট এন্টারটেইনমেন্ট)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘মানুষ’ গল্পটি মাথায় এলো কীভাবে, বাস্তবের কারো জীবনে কি এটি অনুপ্রাণিত?
সঞ্জয় সমদ্দার: করোনাকালে গল্পটি আমার মাথায় আসে। তখন আমরা একে অপরের সঙ্গে ফোনেই আলাপ করতাম বেশি। সেই সময় অনেকে দেখা হলেই বলতেন, এ যাত্রায় যদি কোনোভাবে বেঁচে যাই তাহলেই শুকরিয়া। তখন বুঝলাম, মানুষের জন্য বেঁচে থাকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জীবনে অনেক কিছু পেতে চাই, অনেক কিছু করতে চাই; কিন্তু কখনও কখনও মনে হয় জীবনটাই তো অনিশ্চিত! ফলে আমার মনে হলো, আমাদের জীবন দর্শন কিংবা আমরা যা যা ভাবি, সেসবের কোনো কিছুই মূলত আবশ্যকীয় নয়। পরিস্থিতির সঙ্গে সবই পাল্টে যায়। সেখান থেকেই মূলত ‘মানুষ’ গল্পটি মাথায় আসে। এতে বাবা-মেয়ের আবেগঘন কিছু মুহূর্ত আছে। এগুলোর শুটিং করতে গিয়ে আমার মেয়ে দিজুকে অনেক মিস করেছি। ওর বয়স সাড়ে পাঁচ বছর। সিনেমাটির শিশুশিল্পী অয়ন্যাকে দেখলে আমার মেয়ের কথা মনে পড়তো।

‘মানুষ’ সিনেমার পোস্টারে জিৎ (ছবি: গ্রাসরুট এন্টারটেইনমেন্ট)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: সিনেমাটির টাইটেল গান আপনারই লেখা। গল্প লেখার সময় কি এই ভাবনা ছিলো?
সঞ্জয় সমদ্দার: না। সম্পূর্ণ চিত্রনাট্য তৈরি করে শুটিং শুরুর পর মনে হতে থাকে, সিনেমার মেজাজ তৈরির জন্য একটি গান দরকার। তখন গানটির ভাবনা মাথায় আসে। এটি সিনেমার মেজাজ তৈরির জন্য জুতসই লেগেছে। ‘আজকে যা ঠিক কালকে তা ভুল/মানুষ নিয়তির হাতের পুতুল’ লাইন দুটির মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছি, আমরা হয়তো অনেকেই অনেক কিছু ভাবলেও নিয়তিকে কখনো এড়াতে পারি না।

বিদ্যা সিনহা মিম ও সঞ্জয় সমদ্দার (ছবি: ফেসবুক)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: যৌথ প্রযোজনা ছাড়া ভারতীয় সিনেমায় বাংলাদেশের পরিচালক ও অভিনেত্রী সচরাচর দেখা যায় না। ‘মানুষ’ সেদিক থেকে ব্যতিক্রম। সিনেমাটিতে সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসিপি) মন্দিরা চরিত্রে বিদ্যা সিনহা মিমকে নির্বাচনের কথা বলুন।
সঞ্জয় সমদ্দার: যখন অভিনয়শিল্পী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হচ্ছিলো তখন জিৎ দাদা উল্লেখ করেন, দেশীয় পুলিশ অফিসারের মতো দেখতে এমন একজনকে লাগবে। তিনি বলেন, ‘মিমের উচ্চতা ভালো, তার সঙ্গে আমার কাজও হয়েছে আগে।’ তখনই মিমকে চূড়ান্ত করা হয়। ২০১৮ সালে জিৎ দাদার প্রযোজনায় ‘সুলতান-দ্য সেভিয়ার’ সিনেমায় অভিনয় করেছে মিম। তাকে পাণ্ডুলিপি পাঠিয়ে বললাম, গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্র আছে, যদি তুমি অভিনয় করতে চাও। মিম বললো, ‘দাদা ঠিক আছে, তাছাড়া আপনার সঙ্গে তো আমার আগেও কাজ হয়েছে।’ আমার ‘মনের মানুষ’ নাটকে ছিলো মিম। মন্দিরা চরিত্রে তাকে বেশ মানিয়েছে। মিম থাকায় খুশি হয়ে গিয়েছিলাম এজন্য যে, আমার দেশের একজন অভিনয়শিল্পীকে পাচ্ছি। আমার দেশ থেকে আমি একাই গিয়েছিলাম। যেদিন মিমের সঙ্গে শুটিং করলাম মনে হলো, দেশের একটা মানুষ অন্তত আছে!’

‘মানুষ’ সিনেমার দৃশ্যে জিৎ ও সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় (ছবি: গ্রাসরুট এন্টারটেইনমেন্ট)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: পশ্চিমবঙ্গের ১১৮টি সিনেমাহলে মুক্তি পেলো ‘মানুষ’। কেমন সাড়া পেলেন?
সঞ্জয় সমদ্দার: সিঙ্গেল স্ক্রিনের সিনেমাহল থেকে দারুণ সাড়া পেয়েছি। বিভিন্ন সিনেমাহল ঘুরে দেখেছি, সংলাপের মাঝে মাঝে দর্শকেরা হাততালি দিচ্ছেন। সিনেমা উপভোগ শেষে পরিচালকের প্রশংসা করেছেন অনেকে। এটি একটি পারিবারিক সিনেমা, তাই পরিবারের সঙ্গে বসে বিভিন্ন বয়সী দর্শক উপভোগ করেছেন। ৬৫-৭০ বয়সী দম্পতিরাও সিনেমাহলে ‘মানুষ’ দেখেছেন। যেমনটা চেয়েছিলাম তেমনই হয়েছে।

সঞ্জয় সমদ্দার (ছবি: ফেসবুক)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: বাংলাদেশে এখন ভারতীয় সিনেমা মুক্তিতে বাধা নেই। তাছাড়া ‘মানুষ’ বাংলা সিনেমা। বাংলাদেশে কি এটি মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে?
সঞ্জয় সমদ্দার: ‘মানুষ’ বাংলাদেশে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা এখনো চলছে। যদি দেশে মুক্তি পায় তাহলে আমার চেয়ে বেশি খুশি আর কেউ হবে না। সিনেমাটি দেখার পর দর্শকেরা ভালো-মন্দ দুটি কথা বলবেন, এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে। অপেক্ষায় আছি এখনো। তবে নিশ্চিতভাবে কিছু জানি না।

সঞ্জয় সমদ্দার (ছবি: নূর)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: বেশকিছু টেলিভিশন নাটক পরিচালনা করেছেন আপনি। এরপর ওয়েব সিরিজ আর ওয়েব ফিল্ম বানিয়েছেন। এবার সিনেমা নির্মাণ করলেন। পরবর্তী লক্ষ্য কী?
সঞ্জয় সমদ্দার: নতুন অনেক কাজের কথাবার্তা চলছে। এখন সিনেমা আর ওটিটি প্ল্যাটফর্মের মধ্যেই থাকতে চাই। সিনেমা অনেক বড় বিষয়। দুম করে বলে দিলাম আর হয়ে গেলো– বিষয়টি মোটেও তেমন না। তবে আগামী মাসের (ডিসেম্বর) মধ্যে নতুন কিছু একটার ঘোষণা দেওয়ার ইচ্ছে আছে। আমার পাণ্ডুলিপিগুলো প্রস্তুত আছে। সবসময় বিশ্বাস করি, কাজের মধ্যে থাকা গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য একটা কাজ শেষ হওয়ার পর যতো দ্রুত সম্ভব আরেকটি কাজে যুক্ত হতে চাই।

আলাপচারিতা

‘ট্রেন্ডিংয়ে থাকার চেয়ে দর্শকদের কমেন্ট মনোযোগ দিয়ে পড়ি’

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

কেএম সোহাগ রানা (ছবি: আকিব রহমান)

এবারের ঈদুল আজহার অন্যতম জনপ্রিয় নাটক ‘চাঁদের হাট’। ইউটিউবে বেশ কিছুদিন ট্রেন্ডিংয়ে এক নম্বরে ছিলো এটি। এখনো ট্রেন্ডিংয়ে আছে এই নাটক। এটি লিখে ও পরিচালনা করে প্রশংসিত হয়েছেন তরুণ নির্মাতা কেএম সোহাগ রানা। এর আগেও বেশকিছু নাটক পরিচালনা করেছেন তিনি। নির্মাতা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিনেমাওয়ালার সঙ্গে প্রায় একযুগ ধরে আছেন সোহাগ রানা। লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে আর গল্প বুনে দিন কাটে তার। ‘চাঁদের হাট’ ও নিজের স্বপ্ন নিয়ে সিনেমাওয়ালা নিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় সময় দিয়েছেন তিনি।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘চাঁদের হাট’ মুক্তির পরপরই ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ের শীর্ষে চলে আসে। এরপর টানা কয়েক সপ্তাহ এক নম্বরেই ছিলো। এখনো ট্রেন্ডিংয়ে আছে নাটকটি। এর অনুভূতি কেমন?
কে এম সোহাগ রানা: কোনো নাটক ট্রেন্ডিংয়ে থাকা মানে দর্শকদের মধ্যে সেটি নিয়ে চাহিদা তৈরি হয়েছে। তবে অনেক সময় দেখা যায় ভালো-মন্দ যেকোনো কাজই ট্রেন্ডিংয়ে চলে আসে। কনটেন্ট যদি ভালো হয় তাহলে সেটা টিকে থাকে, ভালো না হলে এক-দুই দিনেই হারিয়ে যায়। এজন্য আমি ট্রেন্ডিংয়ে থাকার চেয়ে দর্শকদের কমেন্ট মনোযোগ দিয়ে পড়ি। এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও দর্শকের ভালো লাগা ও খারাপ লাগা বুঝতে পারি। ‘চাঁদের হাট’ দীর্ঘদিন ধরে ট্রেন্ডিংয়ে আছে, পাশাপাশি দর্শকদের ইতিবাচক কমেন্ট দেখে বুঝেছি নাটকটি তাদের ভালো লেগেছে। আর মানুষের ভালোবাসা পেতে কার না ভালো লাগে! দর্শকের এসব প্রতিক্রিয়া আমাকে আরো আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘চাঁদের হাট’ গল্পটি মাথায় এলো কীভাবে? নাটকটি কি কোনো বাস্তব ঘটনায় অনুপ্রাণিত?
সোহাগ রানা: একটি চরিত্রকে ধরে গল্পটি মাথায় এসেছে। সিনেমাওয়ালার অফিসে একদিন ভাইয়া (মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ) এসে আমাকে বলেন, ‘ঈদ সম্পর্কিত একটা গল্প বানাও।’ তখনো জানি না কী করবো। তখন ভাইয়া বলছিলেন, ‘গরুর হাটের দালাল চরিত্র নিয়ে কিছু একটা করতে পারো।’ তার ওই পরামর্শ থেকেই গল্পের শুরু। বাকি গল্পের সিংহভাগ অংশ বাস্তব জীবনের বিভিন্ন ঘটনা থেকে নেওয়া।

কেএম সোহাগ রানা (ছবি: ফেসবুক)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: অনেক দর্শক এই নাটকের শেষ দৃশ্যের প্রতি আবেগপ্রবণ হওয়ার কথা আলাদাভাবে বলেছেন। এর মাধ্যমে কী বার্তা দিতে চেয়েছেন?
সোহাগ রানা: মানুষের জন্য মানুষের ভালোবাসার বার্তা দিতে চেয়েছি। আমরা একে অপরকে ভালোবাসলে প্রত্যেকের জীবন হবে সুন্দর। মানুষের প্রতি মানুষের মায়া আর ভালোবাসা থাকলে পুরো পৃথিবীটা সুন্দর হয়ে যায়। এখন সেটারই অভাব দেখি চারপাশে।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: দর্শকদের কাছ থেকে নিশ্চয়ই ভালো সাড়া পেয়েছেন। আপনার পরিবারের লোকজন কী বললেন?
সোহাগ রানা: আম্মু আমার কাজ নিয়মিত দেখেন। তিনি আমাকে তার মতো ভালো লাগা ও খারাপ লাগা প্রকাশ করেন। ‘চাঁদের হাট’ আম্মুর বেশ ভালো লেগেছে। আমার পরিবারের বাকিরা ও কাছের বন্ধুরা আলাদা করে তাদের ভালো লাগার কথা জানিয়েছে।

‘চাঁদের হাট’ নাটকের শুটিংয়ে কেএম সোহাগ রানা (ছবি: আকিব রহমান)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: নাটকের শুটিং করার অভিজ্ঞতা বলুন। হাটে কাজ করার চ্যালেঞ্জ কী কী ছিলো?
সোহাগ রানা: আমরা যখন শুটিং করি তখন প্রচন্ড গরম ছিলো। গরমেই বস্তিতে ও গরুর হাটে শুটিং করেছি। ঈদুল আজহার আগে গাবতলী গরুর হাটে শুটিং করা মানে বুঝতেই পারছেন কী ধকল গেছে আমাদের ওপর। তবে আমাদের চিত্রগ্রাহক আদিত্য মনিরসহ পুরো টিম যথেষ্ট করিতকর্মা ও সুদক্ষ, ফলে আমরা সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ভালোভাবে শুটিং সেরে আসতে পেরেছি।

‘চাঁদের হাট’ নাটকের শুটিংয়ে অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে কেএম সোহাগ রানা (ছবি: আকিব রহমান)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘চাঁদের হাট’ নাটকের অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে কিছু বলুন।
সোহাগ রানা: প্রত্যেকেই দারুণ, অসাধারণ ও সহায়তাপ্রবণ। তৌসিফ মাহবুব শুটিংয়ের অনেক আগে থেকেই আমার সঙ্গে গল্প নিয়ে একাধিকবার বসেছেন, সময় দিয়েছেন। তার মধ্যে ভালো কাজের প্রতি অন্যরকম ভালোবাসা দেখেছি। তিনি ভালো মনের মানুষ এবং নিঃসন্দেহে একজন দারুণ অভিনেতা। ডা. এজাজুল ইসলাম ও মনিরা মিঠুর অভিনয় ছোটবেলা থেকেই দেখছি, কী অসাধারণ অভিনয় করেন তারা! আর কেয়া পায়েল দিন দিন নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে আগেও অনেক কাজ করেছি। সেই হিসেবে নিজের পরিবারের মতো টিম নিয়ে বেশ আনন্দে শুটিং করেছি।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: এর আগে কী কী নাটক পরিচালনা করে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন?
সোহাগ রানা: গত ঈদুল ফিতরে ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’র জন্য দারুণ সাড়া পেয়েছি। এতে অভিনয় করেছেন তৌসিফ মাহবুব ও তাসনিয়া ফারিণ। আমার পরিচালিত অন্যান্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘অ্যাওয়ার্ড’ (ফারহান আহমেদ জোভান, তাসনিয়া ফারিণ), ‘সাদা রুমাল’ (জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, তাসনিয়া ফারিণ), ‘বিষয়টা ভালোবাসার’ (তৌসিফ মাহবুব, তানজিম সাইয়ারা তটিনী), ‘হয়নি বলা কোনো কথা’ (তৌসিফ মাহবুব, সাদিয়া আয়মান), ‘এমন একটা তুমি চাই’ (তৌসিফ মাহবুব, সাদিয়া আয়মান), ‘ওসিডি’ (শামীম হাসান সরকার, সারিকা সাবাহ), ‘শনিবার’ (শামীম হাসান সরকার, তাসনিয়া ফারিণ), ‘প্লেয়ার্স’ (সামিরা খান মাহি), মিনি সিরিজ ‘দুষ্টু ছেলের দল’ ও ‘ঠান্ডা গরম’।

কে এম সোহাগ রানা (ছবি: আকিব রহমান)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের সহকারী হিসেবে নাটকে যুক্ত হয়েছেন আপনি। শুরুতে কী ভেবেছিলেন আজকের অবস্থানে আসতে পারবেন?
সোহাগ রানা: সত্যি বলতে, অবস্থান নিয়ে কখনো ভাবিনি। ভাইয়ার মতো এতো বড় মাপের একজন পরিচালকের সান্নিধ্যে থাকা ও তার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাওয়া আমার জন্য ভাগ্যের ব্যাপার। তার মতো একজন গুণী মানুষ আমাকে সবসময় ছোট ভাইয়ের মতো পাশে রেখে যেভাবে কাজ শিখিয়েছেন তাতে আমি ঋনী হয়ে থাকবো। তার কাছে এখনো শিখছি, সবই আমার প্রাপ্তি।

কেএম সোহাগ রানা (ছবি: ফেসবুক)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: এখন নতুন কী কী কাজ করছেন?
সোহাগ রানা: ‘ম্যাজিক মোমেন্ট’ নামের নতুন একটি গল্পের শুটিংয়ে যাচ্ছি। এছাড়া পরবর্তী বেশ কিছু কাজের পরিকল্পনা করছি।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: আপনার স্বপ্ন বা লক্ষ্য কী?
সোহাগ রানা: বাংলা ভাষার কনটেন্ট ও বাংলা সিনেমা নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করা। স্বপ্ন দেখি এমন একটা সময় আসবে, যেদিন বিশ্বব্যাপী আমার সিনেমা নিয়ে আলোচনা হবে!

পড়া চালিয়ে যান

আলাপচারিতা

বাংলাদেশের নাটক পশ্চিমবঙ্গে তুমুল জনপ্রিয়, আমরা নিয়মিত দেখি: দর্শনা বণিক

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

দর্শনা বণিক (ছবি: ইনস্টাগ্রাম)

ঢাকার সিনেমা, মিউজিক ভিডিও এবং বিজ্ঞাপনের পর এবার নাটক ও ওয়েব ফিল্মে কাজ করলেন ভারতের বাঙালি অভিনেত্রী দর্শনা বণিক। ঈদুল আজহা উপলক্ষে আসছে তার অভিনীত প্রথম নাটক ‘ইতিবৃত্ত’ এবং ওয়েব ফিল্ম ‘কলকাতা ডায়রিস’। এসব কাজ, বাংলাদেশের অভিনেতা-অভিনেত্রী, নিজের নতুন সিনেমা ও ব্যক্তিজীবন নিয়ে কলকাতা থেকে হোয়াটসঅ্যাপে সিনেমাওয়ালা নিউজের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ঈদুল ফিতরে মুক্তিপ্রাপ্ত মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ‘ওমর’ সিনেমার ‘ভাইরাল বেবি’ গানে নেচেছেন। কেমন সাড়া পেলেন?
দর্শনা বণিক: ‘ভাইরাল বেবি’র জন্য দারুণ সাড়া পেয়েছি। সিনেমা মুক্তির সময়ও তো বটেই, এখনো অনেকে দেখা হলে বলে গানটি খুবই ভালো লেগেছে তাদের। যেকোনো সিনেমা, গান কিংবা বিজ্ঞাপনে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকে। একইভাবে সবার মন্তব্য হলো– কোরিওগ্রাফি, আমার সহ-নৃত্যশিল্পী, গান, লাইটিং, চিত্রগ্রহণ, পরিচালনাসহ সব মিলিয়ে ‘ভাইরাল বেবি’ দারুণ হয়েছে।

‘ওমর’ সিনেমায় দর্শনা বণিক (ছবি: মাস্টার কমিউনিকেশন্স)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ঢাকায় সিনেমার পর এবার নাটকে অভিনয় করলেন…
দর্শনা বণিক: সত্যি বলতে, নাটকে অভিনয়ের ইচ্ছে ছিলো অনেকদিনের। যখন থেকে নাটক দেখতে ও জানতে শুরু করেছি, তখন থেকে আগ্রহ জন্মায় এবং ভেবেছি নিজে একদিন এমন কাজ করবো। বাংলাদেশের নাটকগুলো পশ্চিমবঙ্গেও তুমুল জনপ্রিয়। আমরাও ঢাকার নাটক দেখি, খোঁজ রাখি। আমার বাবার ইচ্ছে ছিল, একটা-দুটো নাটকে অভিনয় করি। সেই ইচ্ছে থেকেই ‘ইতিবৃত্ত’তে কাজ করা। এর আগে এক-দু’বার অন্যান্য নাটকের ব্যাপারে যোগাযোগ করেছিলেন কেউ কেউ। কিন্তু সেগুলো করা হয়ে ওঠেনি। ‘ইতিবৃত্ত’তে শেষ পর্যন্ত কাজ করা হলো।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: রাফাত মজুমদার রিংকুর পরিচালনায় ‘ইতিবৃত্ত’তে আপনার চরিত্রটি কেমন?
দর্শনা বণিক: আমার চরিত্রটি বর্তমান সময়ের আদর্শ প্রেমিকার। একটি সুন্দর প্রেমের গল্প আছে এতে। এক তরুণের ওপর মাদকাসক্তির ক্ষতিকর প্রভাব এবং তার প্রেমের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে কাহিনিতে। এ নাটকে অভিনয় করে আমার খুবই ভালো লেগেছে।

‘ইতিবৃত্ত’ নাটকে দর্শনা বণিক ও ইয়াশ রোহান (ছবি: এসবিই)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘ইতিবৃত্ত’ নাটকে আপনার সহশিল্পী ইয়াশ রোহাহানে কী কী গুণ চোখে পড়েছে?
দর্শনা বণিক: ইয়াশ রোহানের সঙ্গে খুব বেশি আড্ডা হয়নি আমার। কারণ অনেক দৃশ্য থাকায় আমাদের সারাক্ষণই শুটিংয়ে মনোযোগ দিতে হয়েছে। এর মধ্যে যতটুকু দেখেছি তাতে বলতে পারি, ইয়াশ খুব আন্তরিক ও ভালো মনের মানুষ। অভিনেতা হিসেবে তিনি দারুণ, নিজের চরিত্র ও কাজ নিয়ে সিরিয়াস থাকেন।

দর্শনা বণিক (ছবি: ইনস্টাগ্রাম)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ঢাকায় শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিলো?
দর্শনা বণিক: মোট পাঁচদিনের মতো শুটিং হয়েছে। এরমধ্যে আমার কাজ ছিলো চার দিনের। ঢাকার শহরের বিভিন্ন প্রান্তে শুটিং করেছি আমরা। এর আগে বাংলাদেশে যেসব সিনেমায় অভিনয় করেছি সেগুলোর শুটিং ঢাকার পাশাপাশি অন্যান্য জেলায় হয়েছে। এ কারণে আগের কোনোবার ঢাকাকে ভালোভাবে দেখার সুযোগ হয়নি। ‘ইতিবৃত্ত’র শুটিংয়ে গিয়ে এবার সেই সুযোগ পেয়েছি। সত্যি বলছি, আমি ঢাকা শহরের প্রেমে পড়েছি! আমার বাবার বাড়ির সবাই ঢাকার বাসিন্দা ছিলেন। সেই সুবাদে ঢাকার ব্যাপারে অনেক কিছু শুনেছিলাম। শহরটা বড়সড়। অবশেষে ঢাকা শহর মনের মতো করে দেখতে পেলাম। ঢাকার রাস্তাঘাটের ব্যস্ততা কলকাতা শহরের মতোই অনেকটা। ঢাকার ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে। এর সঙ্গে বর্তমান সময়ের ব্যস্ততা মিলিয়ে আমার খুবই ভালো লেগেছে। ঢাকায় অনেক পুরনো ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। ইউরোপীয় অনেক শহরে এমনটা চোখে পড়ে। ঢাকাকে ভালোবেসে ফেলেছি!

দর্শনা বণিক (ছবি: ইনস্টাগ্রাম)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: আগামীতে আবার প্রস্তাব পেলে ঢাকার নাটকে কাজ করবেন?
দর্শনা বণিক: দেখুন, আমি সিনেমার মানুষ। ভারতে বিভিন্ন ভাষার সিনেমায় অভিনয় করেছি। তবে কোনো কারণে ছোট পর্দায় আমার কাজ করা হয়ে ওঠেনি। সবসময় সিনেমা কিংবা ওটিটি প্ল্যাটফর্মে আমাকে দেখেছে দর্শকরা। ২০১৮ সালে যখন থেকে অভিনয় করি, তখন ওয়েব সিরিজ সবে জনপ্রিয় হচ্ছে। আগামীতে সিনেমা ও ওয়েব সিরিজ আমার মূল লক্ষ্য থাকবে। তবে ভালো গল্প ও চরিত্র পেলে নাটকে কাজ না করার তো কারণ নেই।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ঢাকার খাবার নিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা কেমন, কোন খাবার বেশি উপভোগ করেন?
দর্শনা বণিক: ঢাকার খাবারের বৈচিত্র্য অনেক। কলকাতার জামাই ষষ্ঠীর প্রসঙ্গ টেনে যদি বলতে হয় তাহলে তার থেকেও বেশি আইটেম থাকে ঢাকায় খাবারের টেবিলে। আর আপনারা এতো আতিথেয়তা করে খাওয়ান যে খেতেই হয়! বাংলাদেশের চুইঝাল মাটন আমার ভীষণ পছন্দের।

দর্শনা বণিক (ছবি: ইনস্টাগ্রাম)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ঢাকার অভিনেতাদের মধ্যে কার কার কাজ ভালো লাগে? তাদের মধ্যে কোন কোন অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে আছে?
দর্শনা বণিক: বাংলাদেশের নাটক দেখি। ঢাকার অভিনেতাদের মধ্যে অনেকের অভিনয় ভালো লাগে। নাম বললে তো অনেকের কথা বলতে হয়, হয়তো এক-দুই জনের নাম ভুলেও যেতে পারি! সেজন্য আলাদাভাবে কারো নাম নিচ্ছি না।

বাংলাদেশের নাটক ও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠিত প্রত্যেকের কাজ দেখি, খোঁজ রাখি। তাদের অভিনয় খুবই ভালো লাগে। সিনেমায় তো অবশ্যই আবার শাকিব খানের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে আছে। এছাড়া সিয়াম আহমেদ, শরিফুল রাজের বিপরীতেও অভিনয় করতে চাই। ছোট পর্দার কথা বললে চঞ্চল চৌধুরী, মোশাররফ করিম, অপূর্ব ও আফরান নিশোর সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে হয়। নিশো সম্ভবত এখন আর নাটক করছেন না, তাই তার সঙ্গে সিনেমাতেই কাজ করতে চাইবো। ছোট পর্দার অভিনেতাদের মধ্যে ফারহান আহমেদ জোভান আমার খুব পছন্দের। তার সঙ্গেও কাজ করার খুব ইচ্ছে হয়।

দর্শনা বণিক (ছবি: ইনস্টাগ্রাম)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: বাংলাদেশের কয়েকজন অভিনেত্রী পশ্চিমবঙ্গে কাজ করেছেন, এখনও করছেন। এক্ষেত্রে জয়া আহসান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, তাসনিয়া ফারিণের কথা বলা যায়। ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডসেও তাদের জয়জয়কার দেখা গেছে। তাদের নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
দর্শনা বণিক: জয়া আহসান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও তাসনিয়া ফারিণ প্রত্যেকেই গুণী ও ভালো অভিনেত্রী। তাদের কাজ অবশ্যই দেখি। তারা যেভাবে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে চলেছেন, সঠিকভাবে সব বহাল রেখেছেন, নিজেদের পরিণত করছেন, আরো ভালো ভালো কাজ বেছে নিচ্ছেন; সেসব অবশ্যই শেখার বিষয়।

দর্শনা বণিক (ছবি: ইনস্টাগ্রাম)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ঈদুল আজহায় তো আপনাকে ঢাকার ওটিটি প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যাবে। বঙ্গ’তে মুক্তি পাবে ‘কলকাতা ডায়রিস’। ওয়েব ফিল্মটির গল্প শুনি।
দর্শনা বণিক: এখানে আমার চরিত্রের নাম শর্মী। সে মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে। সফল উদ্যোক্তা অনামিকা সাহার অফিসে চাকরি করে শর্মী। একদিন ঢাকা থেকে কলকাতায় যাওয়া স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান পিকের সঙ্গে অনামিকাকে পরিচয় করিয়ে দেয় শর্মী। এরপর তৈরি হয় জটিলতা। অনামিকা সাহার ভূমিকায় শ্রীলেখা মিত্র ও পিকে চরিত্রে আছেন বাংলাদেশের অভিনেতা শিফাত আমিন। ‘কলকাতা ডায়রিস’ পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশের রাশেদ রাহা। গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন বাংলাদেশের আরেক তরুণ খায়রুল বাসার নির্ঝর। কলকাতার নিউটাউন ও রাজারহাটে এর শুটিং হয়েছে।

‘কলকাতা ডায়রিস’ ওয়েব ফিল্মের পোস্টার (ছবি: বিগ আর এন্টারটেনমেন্ট প্রোডাকশন)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: বাংলাদেশে আপনার ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছে। এর প্রিমিয়ারে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছিলেন। ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের বিপরীতে ‘অন্তরাত্মা’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এটি মুক্তির ব্যাপারে কিছু জানেন?
দর্শনা বণিক: যতোদূর জানি ‘অন্তরাত্মা’ মুক্তি পাওয়ার কথা চলতি বছরেই। তবে সেটা কবে নির্দিষ্ট করে সত্যি জানি না। মূলত প্রযোজকের ওপর নির্ভর করছে মুক্তির ব্যাপার। সিনেমাটির সঙ্গে যুক্ত আমরা প্রত্যেকে বড় পর্দায় আসার অপেক্ষা করছি। দেখা যাক!

সিনেমাওয়ালা নিউজ: সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুলের সঙ্গে দুটি মিউজিক ভিডিওতে মডেল হয়েছেন। এমন কাজের প্রস্তাব কি আর পেয়েছেন?
দর্শনা বণিক: ইমরানের ‘মেঘের ডানা’ ও ‘তোর নামের ইচ্ছেরা’ গানের মিউজিক ভিডিওতে মডেল হয়েছি। এরপর এক-দুটো কাজের প্রস্তাব পেয়েছি, কিন্তু কোনও কারণে সেগুলো করা হয়নি। তবে ঢাকায় নিয়মিতই বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শুট হতে থাকে আমার। গত ঈদেও বিজ্ঞাপনের কাজ করেছি। ভবিষ্যতেও করতে চাই।

দর্শনা বণিক (ছবি: ইনস্টাগ্রাম)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ভারতের বাংলা সিনেমার পাশাপাশি বলিউডে ও দক্ষিণী সিনেমায় অভিনয় করেছেন। বাংলা, হিন্দি কিংবা অন্য ভাষার নতুন সিনেমার খবর কী?
দর্শনা বণিক: নতুন আরেকটি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে নাম লিখিয়েছি। সেটি হলো ভোজপুরি। সেখান থেকে আমার নতুন একটি সিনেমা আসবে। দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতেও আমার কাজ চলছে। কয়েকদিন আগে ডিজনি হটস্টারে আমার অভিনীত ‘সেভ দ্য টাইগার্স টু’ নামের একটি ওয়েব সিরিজ মুক্তি পেয়েছে। বলিউডের তিনটি হিন্দি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় আছে।

দর্শনা বণিক (ছবি: ইনস্টাগ্রাম)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: রান্না কি করেন? সৌরভ দাসের সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে কথাবার্তা হয়?
দর্শনা বণিক: একদমই রান্না করি না। শখের বশে মাঝে মধ্যে কিছু বানাই, তবে সেটাকে রান্না বলা যায় না। সৌরভ বাংলাদেশের কাজের খোঁজখবর রাখে। বিশেষ করে বাংলাদেশের সংগীতশিল্পীরা নতুন কী বের করলো দেখে। আমরা গাড়িতে সবসময় কোক স্টুডিও বাংলার গান শুনি, বাংলাদেশের গান শুনি। সৌরভেরও বাংলাদেশে কাজ করা ও ঘুরে বেড়ানোর ইচ্ছে আছে।

পড়া চালিয়ে যান

আলাপচারিতা

ভক্তদের ভালোবাসার কথা ভাবলে নীরবে আমার চোখে জল চলে আসে: নাসিরউদ্দিন খান

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

নাসিরউদ্দিন খান (ছবি: ফেসবুক)

‘সিন্ডিকেট’ ও ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ ওয়েব সিরিজের সুবাদে অভিনেতা নাসিরউদ্দিন খানের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। ঈদুল আজহায় মুক্তি পেয়েছে তার নতুন সিনেমা ‘প্রহেলিকা’। এতে ক্লাসিক্যাল সংগীতজ্ঞ জামশেদ চরিত্রে দেখা গেছে তাকে। চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত সিনেমাটি নিয়ে দারুণ সাড়া পাচ্ছেন তিনি। সিনেমাওয়ালা নিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় ১০ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘প্রহেলিকা’য় আপনার চরিত্রের কারিশমা কী?
নাসিরউদ্দিন খান: কারিশমা কী ঠিক জানি না। এখানে আমার চরিত্রটি একটু আলাদা। সে একজন ক্লাসিক্যাল সংগীতজ্ঞ। বাকিটা দর্শকরা সিনেমাহলেই দেখছেন।

‘প্রহেলিকা’ সিনেমায় নাসিরউদ্দিন খান (ছবি: রঙ্গন মিউজিক)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘প্রহেলিকা’য় মাহফুজ আহমেদের সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন হলো?
নাসিরউদ্দিন খান: সত্যি বলতে, তার সঙ্গে কাজ করে আমি আপ্লুত। তিনি আমাদের দেশের অনেক পুরনো এবং খুবই ভালো অভিনেতা। আমরা তাকে নানামাত্রিক চরিত্রে দেখেছি। ‘প্রহেলিকা’র শুটিংয়ে যাওয়ার আগেই তার সঙ্গে পরিচয় হয় আমার। শুটিং শুরুর আগে প্রায় ৮-১০ বার আমাদের দেখা হয়েছে। আমরা রিহার্সেল করেছি, কথাবার্তা বলেছি, একজন আরেকজনকে জেনেছি। তখন বুঝলাম লোকটা অদ্ভুত! দূর থেকে অন্যরকম মনে হলেও পরে মিশতে গিয়ে দেখি মাহফুজ ভাই একজন অসাধারণ মানুষ। তিনি অন্যদের অনেক সম্মান দেন। তিনি যেহেতু একজন পরিচালকও, তার কাছ থেকে অনেক টিপস পেয়েছি। সবচেয়ে বড় কথা, তার কাছ থেকে সম্মান পেয়েছি। এজন্য মাহফুজ ভাইয়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘প্রহেলিকা’য় চিত্রনায়িকা শবনম বুবলীর বিপরীতে অভিনয় করেছেন আপনি। নিখাদ রোমান্টিক সিনেমায় কাজের প্রস্তাব পেলে নায়িকা হিসেবে কাকে চাইবেন?
নাসিরউদ্দিন খান: এটি স্ক্রিপ্টের ওপর নির্ভর করবে। স্ক্রিপ্টে আমার বয়স ৬০ বছর থাকলে সহশিল্পী দরকার হবে একরকম। আর আমার বয়স ৪০ বছর হলে স্বাভাবিকভাবেই আরেক বয়সের নায়িকা লাগবে। নির্দিষ্ট কোনো নায়িকা কিংবা অভিনেত্রী নয়, অবশ্যই স্ক্রিপ্টের প্রয়োজন অনুযায়ী একজন হলেই চলবে।

‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ ওয়েব সিরিজে নাসিরউদ্দিন খান (ছবি: চরকি)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: আপনার ক্যারিয়ার অনেক দেরিতে শুরু হয়েছে বলে মনে করেন?
নাসিরউদ্দিন খান: কখনোই এমন মনে হয় না আমার। কারণ সব ফলেরই পাঁকার একটা সময় থাকে। আমার ফল হয়তো তখন পেঁকেছে কিংবা পর্দার সামনে কাজ করার সময় হয়েছে।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: চাকরি করেও অভিনয় চালিয়ে যাওয়ার প্রতিবন্ধকতা কোথায়?
নাসিরউদ্দিন খান: একজন মানুষ একসঙ্গে ছয়-সাতটি কাজও করতে পারে। তবে কিন্তু আমি পারি না। আমাকে দিয়ে একসঙ্গে অনেক কাজ হয় না। আমার জন্য বিষয়টি মূলত জটিল।

নাসিরউদ্দিন খান (ছবি: ফেসবুক)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ওটিটি প্ল্যাটফর্মকে কি সিনেমা হলের বিকল্প মনে করেন?
নাসিরউদ্দিন খান: কোনো কিছুই কোনো কিছুর বিকল্প নয়। বাংলাদেশে টেলিভিশন আসার পর মঞ্চ কিংবা যাত্রায় কাজ করা অনেকের মনে প্রশ্ন জেগেছিলো, টেলিভিশন কি মঞ্চের বিকল্প হতে যাচ্ছে? উত্তর ছিলো, না। কারণ মঞ্চ আলাদা একটি বিষয়। একইভাবে সিনেমা আলাদা একটি বিষয়। সিনেমাহলে অনেক মানুষ একসঙ্গে সিনেমা দেখে। অন্যদিকে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একা কন্টেন্ট দেখি। সুতরাং কোনোটা কোনোটার বিকল্প নয়।

নাসিরউদ্দিন খান (ছবি: ফেসবুক)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: আগামী দিনে সিনেমা কিংবা ওটিটিতে কী কী পরিবর্তন দেখতে চান?
নাসিরউদ্দিন খান: পরিবর্তন তো শুরু হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। দুই-তিন বছর ধরে যেমন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, সেটি অব্যাহত থাকলেই আমি খুশি। সিনেমা কিংবা ওটিটি দুই মাধ্যমেই এখন কন্টেন্ট নির্ভর কাজ হচ্ছে। যাচাই-বাচাই করে এবং অডিশন নিয়ে অভিনয়শিল্পী চূড়ান্ত করা হচ্ছে। মেক-আপ, কস্টিউম, লাইট, ক্যামেরাসহ প্রতিটি শাখায় পরিবর্তন লক্ষ্য করছি। সবাই খুব সিরিয়াসলি কাজ করছেন।

‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ ওয়েব সিরিজে নাসিরউদ্দিন খান (ছবি: চরকি)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ভাইরাল ব্যাপারটাকে কিভাবে দেখেন?
নাসিরউদ্দিন খান: কোনোভাবেই দেখি না। ভাইরাল হওয়া গুরুত্বপূর্ণ নয়। ভাইরাল অনেক কারণে হয়। গরু আছাড় খেয়ে পড়ে গেলে সেটাও ভাইরাল হয়। সুতরাং ভাইরাল হওয়াটা মূল বিষয় নয়। কন্টেন্ট কেমন সেটাই আসল কথা।

সিনেমাওয়ালা নিউজ: ‘তৈ তৈ তৈ আমার বৈয়ম পাখি কই’ গানটা নিয়ে যখন কাজ করছিলেন তখন কি ভেবেছেন এটি এতোটা সাড়া পাবে?
নাসিরউদ্দিন খান: সত্যি বলতে, কিছুটা আশা ছিলো। অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রে সাধারণত ভাবি কতোটা ভালো হলো কিংবা কতোটা সাড়া পাবে। আগে থেকে ভাবি না কাজটি অনেক মানুষের ভালো লাগবে। কিন্তু এই গানটির বেলায় আমরা কেন জানি আশাবাদী ছিলাম। এর কথা, সুরসহ সব মিলিয়ে আমাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস কাজ করেছে যে, দর্শক-শ্রোতারা এটি পছন্দ করবে। এটি লিখেছে সন্ধি ও ম্যাক্স রহমান, সুর সন্ধির। গানটি আমাদের প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে। ‘বৈয়াম পাখি’ বাচ্চাদেরও গাইতে দেখেছি, এতোটা আশা করিনি।

নাসিরউদ্দিন খান (ছবি: ফেসবুক)

সিনেমাওয়ালা নিউজ: আপনার ভক্তদের উদ্দেশে কিছু বলুন।
নাসিরউদ্দিন খান: যারা আমার কাজ পছন্দ করেন, ভক্ত বলতে তাদেরই বুঝি। তাদের কথা বলে সত্যি শেষ করা যাবে না। একসময় থিয়েটার করেছি। এরপর চাকরি করতাম। পেশা বদলে পর্দার সামনে কাজ করতে এসেছি। এরপর থেকে ভক্ত-দর্শকদের কাছ থেকে যতোটা ভালোবাসা পেয়েছি সেটা আসলে ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। এটা ভাবলে নীরবে একান্তে আমার চোখে জল চলে আসে। খুব ভালোও লাগে। ভক্তদের কথা ভাবতে খুব ভালো লাগে। তাদের জন্য আমার দায়বদ্ধতা অনেক বেড়ে যায়। তাই কাজের ক্ষেত্রে আরো সচেতন হই। শুধু আমার ভক্ত না, সবার ভখ্তদের জন্য শুভকামনা রইলো আমার। সবাই সবসময় ভালো থাকবেন, শরীরের যত্ন নেবেন, মনের যত্ন নেবেন। আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।

পড়া চালিয়ে যান
Advertisement

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ