Connect with us

গান বাজনা

মায়ের কবরে চিরঘুমে গাজী মাজহারুল আনোয়ার

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

গাজী মাজহারুল আনোয়ার

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলা গানের চিরস্মরণীয় গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকার বনানী কবরস্থানে মা খোদেজা বেগমের কবরে সমাহিত করা হয় তাঁকে।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা হিসেবে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয়। এরপর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের শিল্পী, বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ও স্বজনরা। এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে শেষ হয় শহীদ মিনারের বিদায়ী আনুষ্ঠানিকতা।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে রাষ্ট্রীয় শ্রদ্ধা হিসেবে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয় (ছবি: ফেসবুক)

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মরদেহ নেওয়া হয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি)। এখানে বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হয় প্রথম জানাজা। তাঁর প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়েছে চলচ্চিত্রের ১৮ সংগঠনসহ গীতিকবি সংঘ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতিসহ (বাচসাস) বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। বিএফডিসিতে শ্রদ্ধা জানান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে ছিল দ্বিতীয় জানাজা। চ্যানেল আই ভবনে শোকবইয়ে তাঁকে স্মরণ করেছেন অনেকে। সবশেষে গুলশানের আজাদ মসজিদে তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোরে বাসার বাথরুমে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। এরপর তাকে নেওয়া হয় ঢাকার একটি হাসপাতালে। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তিনি স্ত্রী জহুরা আনোয়ার, দুই সন্তান সরফরাজ আনোয়ার উপল ও দিঠি আনোয়ারসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ঢাকার বারিধারা পার্ক রোডে থাকতেন বাংলা গানের আকাশে উজ্জ্বলতম এই গীতিকবি।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে চিকিৎসা শাস্ত্রে অধ্যয়নের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। তবে তার অন্তরে ছিল গীতিকবিতার অমৃত রস।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৬৪ সালে রেডিও পাকিস্তানের মাধ্যমে গান লেখা শুরু করেন। দীর্ঘ ৬০ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের জন্য ২০ হাজারের বেশি কাব্যগুণসমৃদ্ধ গানের বিশাল ভাণ্ডার রচনা করেছেন। বাংলাদেশে আধুনিক বাংলা গানকে সুবোধ্য কবিতার মর্যাদায় উন্নীত করতে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। তাঁর রচিত অনেক গান এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।

১৯৬৭ সালে সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘আয়না ও অবশিষ্ট’র মাধ্যমে প্রথমবার চলচ্চিত্রের জন্য গান লেখেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। সেটি ছিল সত্য সাহার সুরে আঞ্জুমান আরা বেগমের গাওয়া ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’। এমন অনেক গান রচনার জন্য প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে অমর হয়ে থাকবেন তিনি।

২০০৬ সালে বিবিসি বাংলার জরিপে সর্বকালের সেরা কুড়িটি বাংলা গানের তালিকায় স্থান পায় গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা তিনটি দেশাত্মবোধক সৃষ্টি। এগুলো হলো– ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’ এবং ‘একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল’। তিনটি গানই সুর করেন আনোয়ার পারভেজ। এরমধ্যে ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গানটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শুরু থেকে প্রতিদিন বাজানো হতো।

গাজী মাজহারুল আনোয়ার মূলত চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বেশিসংখ্যক গানের রচয়িতা। বাংলাদেশের প্রায় সকল সুরস্রষ্টা তাঁর লেখা গানে সুরারোপ করেছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য– সত্য সাহা, আনোয়ার পারভেজ, সুবল দাস, সমর দাস, আলতাফ মাহমুদ, রবীন ঘোষ, আলাউদ্দিন আলী, খোন্দকার নুরুল আলম, আব্দুল আহাদ, শেখ সাদী খান, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।

গাজী মাজহারুল আনোয়ারের গীতিকবিতায় কাব্যের সমারোহ, ছন্দের অপূর্ব কারুকাজ ও শব্দের প্রাচুর্য ছিলো নান্দনিক। যেমন ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘সে যে কেন এলো না’, ‘বন্ধু তিন দিন তোর বাড়িত গেলাম’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘আমি সাত সাগর পাড়ি দিয়ে’, ‘পান খাইয়া ঠোঁট লাল করিলাম’, ‘ইশারায় শিস দিয়ে’ প্রভৃতি।

চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনা এবং কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনায় উজ্জ্বল ছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকে নিয়মিত গান ও নাটক রচনা করেছেন তিনি। ১৯৮২ সালে মুক্তি পায় তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘নান্টু ঘটক’। তিনি মোট ২১টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন। নিজের প্রতিষ্ঠান দেশ চিত্রকথা থেকে প্রযোজনা করেছেন ‘শর্ত’, ‘চোর’, ‘স্বাক্ষর’, ‘স্নেহ’, ‘উল্কা’সহ ৩১টি ছবি।

মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য স্বাধীন দেশের সর্বপ্রথম পুরস্কার ‘বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড’ পান গাজী মাজহারুল আনোয়ার। ২০০২ সালে তিনি একুশে পদকে ভূষিত হন। ২০২১ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, একাধিকবার বাচসাস পুরস্কারসহ জীবনে শতাধিক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। গীতিকবি সংঘের আজীবন সদস্য ছিলেন এই গুণীজন।

পড়া চালিয়ে যান
মন্তব্য করতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গান বাজনা

সংগীতশিল্পী শাফিন আহমেদ মারা গেছেন

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

শাফিন আহমেদ (জন্ম: ১৪ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬১; মৃত্যু: ২৫ জুলাই, ২০২৪)

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী শাফিন আহমেদ আর নেই। বাংলাদেশ সময় আজ (২৫ জুলাই) সকাল ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে মারা গেছেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় একটি হাসপাতালে গত দু’দিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন এই তারকা। 

ভার্জিনিয়াতেই একটি কনসার্টে অংশ নিতে গিয়েছিলেন শাফিন। গত ২০ জুলাই অনুষ্ঠান শুরুর আগে অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় তাকে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।

শাফিন আহমেদের মৃত্যুতে সংগীতাঙ্গনে এখন শোকের ছায়া। তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন।

১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জন্মের পর তার নাম রাখা হয়েছিল মনোজিৎ দাশগুপ্ত। পরে নাম বদলে রাখা হয় শাফিন আহমেদ। শৈশবে বাবা সংগীতজ্ঞ কমল দাশগুপ্তের কাছে উচ্চাঙ্গ আর মা কিংবদন্তি নজরুলসংগীত শিল্পী ফিরোজা বেগমের কাছে নজরুলসংগীত শিখেছেন শাফিন।

বড় ভাই হামিন আহমেদসহ যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার পর দেশে ফিরে শাফিন গড়ে তোলেন মাইলস ব্যান্ড। গান গাওয়ার পাশাপাশি ব্যান্ডে বেজ গিটার বাজাতেন শাফিন। হামিন আহমেদের সঙ্গে বিবাদের জেরে মাইলস থেকে একাধিকবার বেরিয়ে আলাদাভাবে গান করেছেন তিনি। হামিন ও শাফিনের আরেক ভাই মোহাম্মদ তাহসিন।

শাফিন আহমেদের কণ্ঠে জনপ্রিয় গানের তালিকায় রয়েছে ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘ফিরিয়ে দাও আমারই প্রেম’, ‘আজ জন্মদিন তোমার’, ‘পলাশীর প্রান্তর’ প্রভৃতি।

শাফিন আহমেদের স্মৃতিকথা নিয়ে ‘পথিকার’ নামের একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এটি লিখেছেন সাজ্জাদ হুসাইন।

গানের বাইরে টেলিভিশনের জন্য দুটি ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেছেন শাফিন আহমেদ। এছাড়া রাজনীতিতে এসে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী হয়ে আলোচনা সৃষ্টি করেন তিনি।

পড়া চালিয়ে যান

গান বাজনা

ইউটিউবের গ্লোবাল টপ হান্ড্রেড সংস চার্টের চার নম্বরে ‘লাগে উরাধুরা’

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

‘লাগে উরাধুরা’ গানে শাকিব খান ও মিমি চক্রবর্তী (ছবি: এসভিএফ)

ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের ‘তুফান’ সিনেমার গান ‘লাগে উরাধুরা’ জায়গা করে নিয়েছে ইউটিউবের গ্লোবাল টপ হান্ড্রেড সংস চার্টের চার নম্বরে। এবারই প্রথম বাংলাদেশের কোনো গান এই তালিকার শীর্ষ পাঁচের মধ্যে ঢুকলো। এছাড়া গ্লোবাল টপ মিউজিক ভিডিও চার্টের ৬২ নম্বরে রয়েছে এটি।

‘তুফান’ সিনেমার পরিচালক রায়হান রাফী গতকাল (১২ জুলাই) সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, ‘লাগে উরাধুরা’ গানটি গ্লোবাল টপ হান্ড্রেড সংস চার্টের চার নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে। ইউটিউব গ্লোবাল উইকলি (২৮ জুন থেকে ৪ জুলাই) টপ সংস চার্ট প্রকাশ করলে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

ইউটিউবের গ্লোবাল উইকলি টপ সংস চার্ট

গত ২৭ মে ইউটিউবে চরকির চ্যানেলে অবমুক্ত করা হয় ‘লাগে উরাধুরা’। এখন পর্যন্ত এর ভিউ ৩ কোটি ৯০ লাখের বেশি। গানটি গেয়েছেন প্রীতম হাসান ও দেবশ্রী অন্তরা। এটি লিখেছেন শরিফ উদ্দিন ও রাসেল মাহমুদ। সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন প্রীতম হাসান ও প্রয়াত মাতাল রাজ্জাক দেওয়ান।

‘লাগে উরাধুরা’ গানে প্রীতম হাসান, মিমি চক্রবর্তী ও শাকিব খান (ছবি: এসভিএফ)

‘লাগে উরাধুরা’ গানে শাকিব খানের সঙ্গে কলকাতার নায়িকা মিমি চক্রবর্তীর রসায়ন দেখা গেছে। এছাড়া সংগীতশিল্পী প্রীতম হাসান হাজির হয়েছেন শেষাংশে। নৃত্য পরিচালনা করেছেন ভারতের আদিল শেখ। পোশাক পরিকল্পনায় ফারজানা সান, শিল্প নির্দেশনায় শিহাব নুরুন নবী, চিত্রগ্রহণে তাহসিন রহমান।

‘লাগে উরাধুরা’ গানে মিমি চক্রবর্তী ও শাকিব খান (ছবি: এসভিএফ)

সিনেমাটির সব গানই সাড়া ফেলেছে। আকাশ সেনের কথা, সুর ও সংগীতে ‘দুষ্টু কোকিল’ গেয়েছেন দিলশাদ নাহার কনা। টাইটেল গানে কণ্ঠ দিয়েছেন আরিফ রহমান জয়। এতে র‍্যাপ করেছেন রাপাস্তা দাদু। এর কথা লিখেছেন তাহসান শুভ, সুর ও সংগীত পরিচালনায় নাভেদ পারভেজ।

‘লাগে উরাধুরা’ গানে শাকিব খান ও মিমি চক্রবর্তী (ছবি: এসভিএফ)

‘তুফান’ প্রযোজনা করেছেন প্রযোজক আলফা-আই স্টুডিওজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার শাকিল। এর আন্তর্জাতিক পরিবেশক এসভিএফ, ডিজিটাল পার্টনার চরকি।

পড়া চালিয়ে যান

গান বাজনা

রুনা লায়লা ৬০ নটআউট!

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

সংগীত জীবনের ৬০ বছর পূর্তির আয়োজনে রুনা লায়লা (ছবি: চ্যানেল আই)

কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লার সংগীত জীবনের ৬০ বছর পূর্ণ হলো। গান রেকর্ডিংয়ের হিসাবে আজ (২৪ জুন) এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ারে মোট ১৮টি ভাষায় ১০ হাজারের বেশি গান গেয়েছেন এই মহাতারকা।

রুনা লায়লার সংগীতজীবনের ছয় দশক পূর্তি উদযাপন করা হয়েছে ঢাকার তেজগাঁওয়ে চ্যানেল আইয়ের ছাদবারান্দায়। এখান থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান ‘রুনা লায়লা: সংগীত জীবনের ৬০ বছর।’ তিনি বলেন, ‘আপনাদের দোয়া, আশীর্বাদ ও ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা আমাকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। এই ভালোবাসা, আশীর্বাদ শ্রদ্ধা যেন চিরকাল আমার সঙ্গে থাকে।’

নিজের সংগীত জীবনের ৬০ বছর পূর্তির আয়োজনে শাইখ সিরাজের সঙ্গে রুনা লায়লা (ছবি: চ্যানেল আই)

অনুষ্ঠানে চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ বলেন, ‘নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য তো বটেই, গোটা উপমহাদেশের সংগীতপিপাসু সকলের জন্যই আনন্দের একটি দিন। রুনা লায়লা উপমহাদেশের সংগীতকে যেভাবে সমৃদ্ধ করেছেন, বাঙালি হিসেবে আমরা গর্ববোধ করি।’

বাংলা চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান অভিনেতা আলমগীরের আজ একটি বিশেষ দিন। ১৯৭২ সালের ২৪ জুন সর্বপ্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি।

নিজের সংগীত জীবনের ৬০ বছর পূর্তির আয়োজনে আলমগীরের সঙ্গে রুনা লায়লা (ছবি: চ্যানেল আই)

ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশ-বিদেশের তারকারা। সনু নিগাম বলেন, ‘আপনি দারুণ গুণী শিল্পী ও সুন্দর। আপনার ব্যবহার ভালো। আপনার সঙ্গে দেখা করার সৌভাগ্য হয়েছিলো আমার। যখন থেকে আমার চোখ খুলেছে, তখন থেকে আপনাকে শুনছি। আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা। পৃথিবী আপনাকে ভালোবাসে, আমি আপনাকে ভালোবাসি।’

পাকিস্তানের অভিনেতা ইমরান আব্বাস শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘আপনি বাকি জীবন গাইতে থাকুন, পৃথিবীকে সমৃদ্ধ করুন। পাকিস্তান থেকে ভালোবাসা জানাই।’

অনুষ্ঠানের শেষে রুনা লায়লার কালজয়ী গান ‘শিল্পী আমি তোমাদেরই গান শোনাবো’ গেয়ে শোনান গায়িকা সোমনূর মনির কোনাল। এছাড়া গান গেয়েছেন ইমরান মাহমুদুল, ঝিলিক, লুইপা, অনিমা মুক্তি, অনন্যা।

রুনা লায়লা (ছবি: ফেসবুক)

১৯৬৪ সালের ২৪ জুন মাত্র ১২ বছর বয়সে পাকিস্তানের ‘জুগনু’ সিনেমার ‘গুড়িয়া সি মুন্নি মেরি ভাইয়া’ গানটি গাওয়ার মধ্য দিয়ে পেশাগতভাবে প্লেব্যাকে মনোনিবেশ করেন রুনা লায়লা। গানটি লিখেছেন তিসনা মেরুতি, সুর করেন মানজুর। এরপর পাকিস্তানের বহু সিনেমার জন্য গেয়েছেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধের আগেই ১৯৭০ সালের ২৯ মে মুক্তিপ্রাপ্ত নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘স্বরলিপি’র মাধ্যমে প্রথম বাংলাদেশের সিনেমায় প্লেব্যাক করেন রুনা লায়লা। এতে তার গাওয়া ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’ গানটি তুমুল শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। এটি লিখেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার, সুর করেন সুবল দাস। গানটির সঙ্গে পর্দায় ঠোঁট মিলিয়েছেন চিত্রনায়িকা ববিতা। প্রথম প্লেব্যাকেই ব্যাপক সাড়া ফেলে দেওয়ায় বাংলাদেশের সিনেমার গানে তার কণ্ঠের কদর বেড়ে যায়। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে এসে তিনি একে একে বহু সিনেমায় প্লেব্যাক করে শ্রোতা-দর্শককে মুগ্ধ করেছেন।

রুনা লায়লা

রুনা লায়লা (ছবি: ফেসবুক)

বাংলা ভাষায় রুনা লায়লার বহু আধুনিক জনপ্রিয় গান রয়েছে। তিনি ‘দি রেইন’, ‘জাদুর বাঁশি’, ‘অ্যাক্সিডেন্ট’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘দেবদাস’, ‘প্রিয়া তুমি সুখী হও’ ও ‘তুমি আসবে বলে’ সিনেমায় প্লেব্যাকের জন্য সেরা গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

পড়া চালিয়ে যান
Advertisement

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ