Connect with us

পরিচয়

সৃষ্টির সুখে সোহাগ রানা

সিনেমাওয়ালা রিপোর্টার

Published

on

কেএম সোহাগ রানা একজন স্বপ্নবাজ তরুণ। ক্যামেরার পেছনে ছবি আঁকেন। নির্মাণের মাঝে খুঁজে নেন সৃষ্টির সুখ। লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে কিংবা গল্প বুনে দিন কাটে তার।

কেএম সোহাগ রানা এককভাবে বেশকিছু নাটক পরিচালনা করেছেন। এ তালিকায় আছে ‘ফেয়ার ইন লাভ’ (শামীম হাসান সরকার, তাসনিয়া ফারিণ), ‘শনিবার’ (শামীম হাসান সরকার, তাসনিয়া ফারিণ), ‌‘সাদা রুমাল’ (অপূর্ব, তাসনিয়া ফারিণ), ‘অ্যাওয়ার্ড’ (ফারহান আহমেদ জোভান ও তাসনিয়া ফারিণ), ‘ওসিডি’ (শামীম হাসান সরকার, সারিকা সাবাহ), ‘প্লেয়ারস’ (তামিম মৃধা, সামিরা খান মাহি), ওয়েব সিরিজ ‘ওয়াইজ গাই’ (অ্যালেন শুভ্র, নাজিয়া হক অর্ষা)। এর মধ্যে ওয়েব সিরিজ ‘ওয়াইজ গাই’-এর সিক্যুয়েল কবে আসবে তা নিয়ে দর্শকরা অনেক কৌতূহল দেখিয়েছেন।

‘অ্যাওয়ার্ড’ নিয়েও দারুণ সাড়া পেয়েছেন সোহাগ রানা। তিনি বলেন, ‘অনেকে এই নাটকের গল্পের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতে পেরেছেন। অনেকে নাটকটি দেখে কেঁদেছেন। দর্শকদের এসব সাড়া আমার জন্য পরম পাওয়া।’

মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের সঙ্গে কেএম সোহাগ রানা যৌথভাবে নির্মাণ করেছেন ‘তোমার আমার গল্প’ (মুশফিক আর. ফারহান, তাসনিয়া ফারিণ), ‘হি সি’ (মুশফিক আর. ফারহান, সামিরা খান মাহি) এবং ‘মানিক রতন’ ও ‘মানিক রতন ২’ (শামীম হাসান সরকার, তামিম মৃধা, সারিকা সাবাহ)।

জনপ্রিয় নির্মাতা মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিনেমাওয়ালার অন্যতম সদস্য সোহাগ রানা। নয় বছর ধরে তিনি এখানে আছেন। সিনেমাওয়ালায় যোগ দেওয়ার গল্পটা শুনুন তার মুখে, ‘‘রাজ ভাইয়ার ‘গ্র্যাজুয়েট’ ও ‘মাইক’ ধারাবাহিক দুটি দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম। তার কাজের আঙ্গিক আমার ভালো লাগতো। আমার মনে হতো, সিনেমাওয়ালায় কাজ করতে পারলে আমার ভাবনা বাস্তবায়ন করতে পারবো। সেই সুযোগ পেতে বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করেছি। ঢাকার নিকেতনে তার কার্যালয়ে তিন-চারদিন ঘোরাঘুরি করেছি। কিন্তু রাজ ভাইয়ার দেখা পাইনি। হয়তো তিনি আমাকে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন, কাজের প্রতি আমার সত্যিই আবেগটা আছে কিনা। পরে তো তিনি সুযোগ দিলেন। তখন ছিলাম সিনেমাওয়ালার ছয় নম্বর সহকারী। এখন সিনেমাওয়ালার প্রধান সহকারী এবং একক পরিচালক হিসেবে কাজ করছি।’’

শুটিংয়ের প্রতি আবেগ থেকে পড়াশোনায় সেমিস্টার বিরতিও দিয়েছিলেন সোহাগ রানা। তার কথায়, ‘সিনেমাওয়ালায় কাজের সুযোগ পাওয়ার পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন ফিল্ম স্কুলের সিলেবাস পিডিএফ নামিয়ে দেখতাম। গুগল এক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হয়েছে। তাত্ত্বিক ব্যাপারগুলো দেখার পর শুটিংয়ে সেসবের প্রয়োগ দেখতে দেখতে কাজের প্রতি ভালোলাগা আরও বাড়তে থাকে। আর প্র্যাক্টিক্যাল স্কুল তো রাজ ভাই আছেনই। তাই নির্মাণকেই পেশা হিসেবে নেবো ভেবেছি।’

২০১৫ সালে নিরীক্ষা হিসেবে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘সেলিনা’ দিয়ে পরিচালক হিসেবে পথচলা শুরু করেন কেএম সোহাগ রানা। তবে কাজটি করার পর তার মনে হচ্ছিল তেমন একটা ভালো হয়নি। এ কারণে ফেলে রেখেছিলেন। তার ধারণা ভুল ছিল। ২০১৯ সালে মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের সিনেমাওয়ালার ইউটিউবে এটি মুক্তির পর প্রশংসিত হয়।

সোহাগ রানা এখন মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস (রিলোডেড)’ ধারাবাহিকে সহযোগী পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। এছাড়া আসন্ন ঈদুল ফিতরে কয়েকটি নাটক পরিচালনা করবেন তিনি। এছাড়া আরও কিছু ওয়েব সিরিজ নির্মাণের পরিকল্পনা আছে তার। সবকিছুই সিনেমাওয়ালার জন্য।

অন্য প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের কাজ না করা প্রসঙ্গে সোহাগ রানার যুক্তি, ‘আমাদের যে স্কুলিং, শুটিংয়ের টিম থেকে শুরু করে সবকিছুতে যে রাজকীয় আমেজ পাই, সেটা অন্য প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সচরাচর দেয় না। অল্প বাজেটে ভালো মানের কাজ করা সম্ভবও নয়।’

কেএম সোহাগ রানা সিরাজগঞ্জ শহরের ছেলে। বেড়ে উঠেছেন ঢাকার উত্তরায়। পরিবারের কেউ বিনোদন আঙিনার নন। এ কারণে সমর্থন খুব একটা পাননি। তবে বাধা দেয়নি কেউ। তাই সদিচ্ছা, পরিশ্রম আর মেধার সম্মিলনে এগিয়ে যাচ্ছেন এই তরুণ।

এত কাজ থাকতে নাটক নির্মাণে কেন? কেএম সোহাগ রানার উত্তর, ‘সৃষ্টিতে আনন্দ খুঁজে পাই। নির্মাণের মধ্য দিয়ে মনের ভাবনা তুলে ধরতে পারি, নানান রঙের গল্প বলতে পারি। বিভিন্ন চরিত্রকে মনের মতো করে সাজাই। এটা অন্য কোনও পেশায় থাকলে পারতাম না।’

মন্তব্য করতে ক্লিক করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সিনেমাওয়ালা প্রচ্ছদ